স্বাস্থ্য অধিদফতর বেশ কয়দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমছে বলে জানিয়ে আসছে । চট্টগ্রামেও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা কমে আসছে। তবে রোগীর সংখ্যা কমলেও এখনই ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে রেহাই মিলছেনা দেশবাসীর। অন্তত সেপ্টেম্বরের আগে তো নয়ই। বরঞ্চ, সেপ্টেম্বরে রোগটির প্রকোপ আরো বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ নিয়ে সতর্কবার্তাও দিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে- আগামী কয়দিনের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের জোর সম্ভাবনা রয়েছে। আর বৃষ্টিপাতের কারণে এডিস মশার প্রজনন বা বংশ বিস্তার বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ আরো বাড়তে পারে।
সতর্কবার্তার পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসায় প্রস্তুতি গ্রহনেরও পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমন সতর্কবার্তা আমলে নিয়ে ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ডা. পারভেজ রহিম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। এসময় বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমদ ও সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শন শেষে সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু মোকাবেলায় নগরে আরো তিনটি হাসপাতালকে প্রস্তুত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা। এই তিনটি হাসপাতাল হলো- চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি ও বন্দর হাসাপাতাল।
এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী আজাদীকে বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় এই তিনটি হাসপাতাল পুরোপুরি প্রস্তুত করতে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তার সত্যতা নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন বলেন, আগামী কয়দিনে বৃষ্টিপাত হতে পারে। আর বৃষ্টি হলেই এডিস মশার বংশবিস্তার ঘটে। বৃষ্টির পর তিন সপ্তাহ পর্যন্ত এডিস মশার প্রজনন ঘটতে পারে। যার কারণে ওই সময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে সংস্থাটি সতর্কবার্তা দিয়েছে। আর চট্টগ্রামেও যেহেতু ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে, সেহেতু ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে ডেঙ্গুর চিকিৎসা ও পরিস্থিতি দেখতে শনিবার মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্মসচিব চট্টগ্রামে আসেন। তিনি চমেক হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ড পরিদর্শন করেছেন। আর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমও পরিদর্শন করেছেন। পরে আরো তিনটি হাসপাতালকে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় প্রস্তুত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই তিনটি হাসপাতালও তিনি পরিদর্শন করেছেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ওই তিনটি হাসপাতাল ডেঙ্গুর চিকিৎসায় প্রস্তুত করে তোলা হবে বলেও জানান সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
প্রসঙ্গত, রোগীদের চিকিৎসা সুবিধার্থে ৬০ শয্যার আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু করে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে চমেক হাসপাতাল। তবে ৬০ শয্যার এ ওয়ার্ডে শতাধিক রোগী ভর্তি থাকছেন। এর বাইরে বেসরকারি কয়েকটি হাসপাতালে ভর্তি হলেও সরকারি আর কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ডেঙ্গু রোগীদের আগ্রহ দেখা যায়নি। কিন্তু সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু মোকাবেলায় চমেক হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডটি পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চিকিৎসায় আরো অন্তত দুইশ শয্যা প্রয়োজন হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় চট্টগ্রামে আরো তিনটি হাসপাতাল প্রস্তুত করতে নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ডা. পারভেজ রহিম। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়- চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার। এর মধ্যে প্রায় ৫০টি শয্যা ডেঙ্গুর চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে। আর ১২০ শয্যার বিআইটিআইডি-তে
অন্তত ৫০-৭০টি শয্যা ব্যবহার করা যাবে। একইভাবে একশ শয্যার বন্দর হাসপাতালের সিংহ ভাগ (৬০-৮০টি) শয্যাই ডেঙ্গুর চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে। ডেঙ্গুর চিকিৎসা সেবায় এই তিন হাসপাতালে সবমিলিয়ে প্রায় দুইশটি শয্যা প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে বলেও জানান সিভিল সার্জন।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |