রোহিঙ্গারা এবারও মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি হল না । গতকাল সকাল থেকে টেকনাফ শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যানবাহন প্রস্তুত রাখা হলেও কোনো রোহিঙ্গা সেখানে না আসায় দুপুর সাড়ে ১২টায় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম প্রত্যাবাসন কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে দুই দফা পিছিয়ে গেল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম। এর আগে মিয়ানমারের দেয়া তালিকা অনুযায়ী কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রিত ১০৪১ পরিবারের ৩৪৫০ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। গত বুধবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া উক্ত সাক্ষাৎকারে তারা নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, বসতভিটা ও সম্পদ ফেরত এবং নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারে ফিরতে নারাজ বলে জানায়। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের প্রতিনিধিদের কাছে সাক্ষাৎকারে তারা এমনটি জানিয়েছে। সাক্ষাৎ শেষে হলরুম থেকে বের হওয়ার সময় ২৬ নম্বর ক্যাম্পের এ-ব্লকের বাসিন্দা মুহাম্মদ রিয়াজ (৩২), রশিদ আমিন (৪৫) ও আই-ব্লকের হোসেন আহমদ (৫২) এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ (সিআইসি) মোহাম্মদ খালেদ হোসেন বলেন, ‘শালবন ক্যাম্পের প্রত্যাবাসন তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের দ্বিতীয় দিনের মত সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। কোনো বাধা ছাড়াই রোহিঙ্গারা সাক্ষাৎকার দিতে এসছে।’
রোহিঙ্গা নারী ডি-৩ ব্লকের আনোয়ারা বিবি ও জাহেদা বেগম বলেন, ‘বুধবার সকালে ইউএনএইচসিআর ও ক্যাম্প ইনচার্জের প্রতিনিধিরা ঘরে ঘরে গিয়ে সিআইসি কার্যালয়ে আসতে বলেছেন, তালিকায় নাকি আমাদের পরিবারের নাম রয়েছে। নাম যেহেতু রয়েছে, তাই যাব কি যাব না তা সাক্ষাৎকারে বলেছি। এসময় তারা বলেন, নিজ দেশে ফেরার ইচ্ছা সকলের থাকে, আমাদেরও আছে। কিন্তু আমাদের শর্ত না মানলে আমরা যাব না।’
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বলেন, ‘তারা নিজ দেশে ফিরতে যেসব শর্ত দিয়েছে মিয়ানমার যদি সেগুলো মেনে নেয়, তাহলে তারা ফিরে যাবে। তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে এখন কিছুই করা সম্ভব নয়।’ তবে যেকোনো সময় তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি। গতকাল টেকনাফ শালবাগান ২৬নং ক্যাম্পে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম ছাড়াও মিয়ানমার এবং চীনা প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। চীনের প্রতিনিধি ঝেং তিয়ানঝু বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মধ্যস্থতার দায়িত্ব নিয়েছে চীন। রোহিঙ্গারা কেন তাদের দেশে ফিরতে চাচ্ছে না, মিয়ানমার সরকারের ওপর কেন তাদের সন্দেহ, সেটা দেখা দরকার বলেও মত প্রকাশ করেন তিয়ানঝু। তবে এ সময় মিয়ানমার প্রতিনিধি সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলেননি।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031