প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তৃতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘গাঙচিল’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন । উদ্বোধনের পর বিকালে আবুধাবির উদ্দেশ্যে ডানা মেলে ‘গাঙচিল’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে চাই। তাই এখন থেকে আমরা নিজেদের অর্থ দিয়ে বিমান ক্রয় করবো। বিমান নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। তিনি বলেন, ধার করে আর বিমান কেনা হবে না। আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঋণ নিয়ে উড়োজাহাজ কেনা হলেও এখন থেকে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নিজস্ব অর্থ ঋণের মাধ্যমে বিমান কেনা হবে। আমি চাচ্ছি দুটি কার্গো বিমান নেয়ার জন্য। আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য কার্গো বিমান আমরা কিনবো। গাঙচিল উদ্বোধনের পর উড়োজাহাজটি ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান পরিচালনার ক্ষেত্রে আমি সবাইকে বলবো আন্তরিকতা নিয়ে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আপনারা এটি পরিচালনা করবেন। কারণ হচ্ছে আজ দেশ যদি উন্নত হয়, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়, দেশের উন্নতি যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে সবাই সুন্দর জীবন পাবেন, সুখীভাবে চলতে পারবেন। বিমানের সুনাম বাড়াতে আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি বিমানের সুনাম বৃদ্ধি, যাত্রীসেবার মান উন্নত করা এবং যে বিমানগুলো আমরা এনে দিচ্ছি সেগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হবে। যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, এটা সবার দায়িত্ব। কারণ এটা নিজের দেশের ও নিজস্ব সম্পদ। সে কথা মনে রেখে আপনাদের কাজ করতে হবে। বিমানের রুট বাড়ানো প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বোয়িং থেকে আমাদের নবম প্লেন এলো। আরেকটা এলে ১০টি হবে। কাজেই বোয়িং থেকে আমরা ১০টি বিমান কিনলাম। তবে এখনও আমরা আমেরিকা যেতে পারছি না। আশা করি খুব শিগগির এই সমস্যার সমাধান হবে। যে বিমানগুলো কেনা হয়েছে, এগুলো সরাসরি আমেরিকা যাওয়ার সক্ষমতা রাখে। আমরা চেষ্টা করছি লন্ডনে আরও স্লট বৃদ্ধি করতে। এছাড়া অন্যান্য দেশেও চেষ্টা করছি। যাত্রীসেবা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক রক্ত দিয়ে গেছেন। তার রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। ২৯টি বছর হারিয়ে গেছে এটা দুর্ভাগ্যের। এই সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা উন্নয়ন করেনি, করতেও চায়নি। কারণ যারা ছিল তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করতো না। অনুষ্ঠানে বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফারহাত হাসান জামিল বলেন, বিকালে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে আবুধাবি যাওয়ার মধ্য দিয়ে এ উড়োজাহাজের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হবে। বিমানের চতুর্থ বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার রাজহংস আসবে ১২ সেপ্টেম্বর। এর আগে গত ২৫ জুলাই দেশে আসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তৃতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘গাঙচিল’। কোনোরকম যাত্রাবিরতি ছাড়াই সিয়াটল থেকে সরাসরি ঢাকায় এসে অবতরণ করে বিমানটি। এর মধ্য দিয়ে বিমান বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫টিতে। ১২ সেপ্টেম্বর ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার রাজহংস যোগ হলে উড়োজাহাজের সংখ্যা হবে ১৬। এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ২০০৮ সালে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের সঙ্গে ১০টি নতুন বিমান কেনার চুক্তি করে। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, ২টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এবং ৪টি ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ উড়োজাহাজ। বিমান বহরে থাকা ১৫টি উড়োজাহজের মধ্যে ৯টি বিমানের নিজস্ব। বাকি উড়োজাহাজগুলো বিভিন্ন মেয়াদে লিজে সংগ্রহ করা। বিমানের নিজস্ব উড়োজাহাজের নামকরণ করা হয়েছে। ১০টি বোয়িং উড়োজাহাজের নাম রাখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দে। গতকালের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) মুহাম্মদ ইনামুল বারী, বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফারহাত হাসান জামিল, পরিচালক (প্রকৌশল) খন্দকার সাজ্জাদুর রহিম, পরিচালক (প্রশাসন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ, চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার ভিনীত সুদ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক আবু সাইদ মেহবুব খানসহ বিমান ও সিভিল অ্যাভিয়েশনের অন্য কর্মকর্তারা।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |