উত্তরখণ্ড ও পাঞ্জাবে অন্তত ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছে ভারতে প্রবল বৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশ। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই হিমাচল প্রদেশের। কেবল এই প্রদেশেই ২৪ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া এতে এখনো নিখোঁজ রয়েছে ২২ জন।
টানা বৃষ্টিতে হিমাচলপ্রদেশে ধস নেমেছে চন্ডিগড়-মানালি এবং সিমলা-কিন্নাউর জাতীয় মহাসড়কসহ একাধিক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে বানভাসি হয়েছে হিমাচলপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকা।
এই রাজ্যে বৃষ্টিপাতজনিত কারণে নিহত হয়েছে ২৪ জন। তাদের মধ্যে দু’জন নেপালি। গুরুতর আহত আরও নয়জন। কুলুতে বেড়াতে এসে আটকে পড়েছিলেন এক বিদেশি-সহ ২৫ জন পর্যটক। খাবার এবং আশ্রয় ছাড়াই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে দু’দিন কাটে তাদের। তাদের রবিবার উদ্ধার করা গিয়েছে।
তবে বিভিন্ন জায়গায় আরও অনেক পর্যটক এবং বেশ কিছু স্থানীয় মানুষ আটকে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে। কালকা এবং শিমলার মধ্যে সমস্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে চণ্ডীগড়-মানালি হাইওয়ে। শিমলা, সোলান, কুলু এবং বিলাসপুর জেলার স্কুলগুলি সোমবারও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হিমাচলপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয় রাম ঠাকুর স্থানীয় বাসিনফা ও হিমাচলে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে পাহাড়ি নদীতে হড়পা বানের আশঙ্কা থাকায় পর্যটকদের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
ইতিমধ্যে বৃষ্টির কারনে হিমাচলপ্রদেশ রাজ্যে ৪৯০ কোটি রুপির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে হিমাচলপ্রদেশের মান্ডি, হামিরপুর ও কাংড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা পানিমগ্ন।
হিমাচলের পাশাপাশি আচমকা মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডের একাংশও। দুর্যোগে এই রাজ্যে কমপক্ষে তিনজন প্রাণ হারিয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরো অন্তত ২২ জন। হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে উত্তরকাশী জেলার একাধিক গ্রাম। ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ি। গাড়ি সমেত দেহরাদূনে জলের তোড়ে ভেসে যান এক নারী।
স্রোতের তোড়ে একাধিক বাড়ি ধসে পড়েছে পঞ্জাবেও। বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়ে সেখানে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
তবে এই মুহূর্তে উত্তর ভারতের পরিস্থিতি উন্নতির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বরং আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনার জলস্তর বিপদসীমা ছাপিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে রাজ্য উত্তরপ্রদেশেও। সেখানে গঙ্গা, যমুনা, ঘাঘরা এই তিন নদীই ফুঁসছে। বদায়ুঁ, গঢ়মুক্তেশ্বর, নারাউরা এবং ফারুখাবাদে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা। পালিয়া কালানে সারদা নদী এবং এলগিন ব্রিজ এলাকায় ঘাঘরা নদীও বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রকাহিত হচ্ছে।