জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছেন । পার্টির একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য তাকে এ প্রস্তাব দেন। আজ শনিবার রাজধানীর বনানীর জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের এক যৌথসভায় এ দাবি জানানো হয়। বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চলা সভায় প্রেসিডিয়াম সদস্যরা জাপার গঠনতন্ত্র মোতাবেক পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের নেতা হওয়ার প্রস্তাব দেন। তবে সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা এবং রংপুর-৩ এরশাদের শূণ্য আসনে প্রার্থী নির্ধারণ পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হবে। প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের এ বৈঠকে এরশাদের চল্লিশা পালনের জন্য পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপিদের এক লাখ টাকা করে দলীয় ফান্ডে জমা দিতে বলা হয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সভাপতিত্বে মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ ৩৫ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভার মূল আলোচনা হয়েছে এরশাদের চল্লিশা পালন ও বিরোধী দলের নেতা নির্বাচন প্রসঙ্গে।
এছাড়া এরশাদের শূন্য আসন রংপুর-৩ এর উপ-নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়। সভায় প্রায় সবাই তাদের বক্তব্য উপাস্থাপন করেন। এসময় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা বলেন, পার্টির গঠনতন্ত্র মোতাবেক চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকেই সংসদে বিরোধী দলের নেতা বানানো দরকার। তিনি পার্টির চেয়ারম্যান তাই তিনিই এ পদের জন্য দাবিদার। প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন বলেন, জিএম কাদেরকে এ কারণেই বিরোধী দলের নেতা বানানো উচিত যে তার সঙ্গে পার্টির তৃণমূলের সম্পর্ক রয়েছে। আর পার্টির চেয়ারম্যান বিরোধী দলের নেতা হবেন এটা স্বাভাবিক। প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, পার্টির সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পার্টির গঠনতন্ত্র মোতাবেক পার্টির চেয়ারম্যান যেকোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তাই চেয়ারম্যান চাইলে বিরোধী দলের নেতা তিনি হতে পারেন। প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, পার্টির গতিধারা অব্যাহত রাখতে জিএম কাদেরকে সংসদের বিরোধী দলের নেতা বানানো দরকার। উনি এ দায়িত্ব গ্রহণ করুক এটা তৃণমূল নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রত্যাশা। উপস্থিত নেতাদের কথা শুনার পরে বক্তব্য দেন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি এখন অনেক ঐক্যবদ্ধ। জনগণের কল্যাণে যে ধরনের কর্মসূচি নেয়া দরকার তা সেভাবেই আগাচ্ছে। বন্যা মোকাবিলা, ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চামড়া ইস্যুতে আমরা রাজপথে সরব ছিলাম। আগামী ২৩শে আগষ্ট এরশাদের চল্লিশা হলেও ওইদিন বৌদ্ধ পূর্ণিমা হওয়ায় ৩১শে আগস্ট সারাদেশে একযোগে এরশাদের জন্য দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান। এছাড়া বিরোধী দলের নেতা কে হবে সে বিষয়ে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্তু নেয়া হবে। যাতে পার্টিতে কোনো ধরনের বিভেদ সৃষ্টি না হয়। একইভাবে রংপুর-৩ উপ-নির্বাচনে রংপুরের স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে প্রার্থী হিসেবে চারজনের নাম চাওয়া হবে। তার উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।