পাকিস্তান কাশ্মীরের দ্রুত অবনতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। এমন বৈঠক আহ্বান করে পরিষদের প্রেসিডেন্টকে চিঠি লিখেছে দেশটি। তাতে বলা হয়েছে, কাশ্মীরে ভারতের দখলদারিত্ব সম্প্রসারণের পর দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তায় ভয়াবহ হুমকি সৃষ্টি হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন।

মঙ্গলবার রাতে ইসলামাবাদে ইস্যু করা এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেছি বলেছেন, তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টকে চিঠি লিখেছেন। তাকে অনুরোধ করেছেন কাশ্মীরে ভারতের অবৈধ কর্মকা- ও জাতিসংঘের রেজ্যুলুশন লঙ্ঘনের বিষয়ে আলোচনার জন্য জরুরি বৈঠক আহ্বান করার জন্য। তিনি কাশ্মীর ইস্যুতে পরিষদের অধিবেশন আহ্বানের অনুরোধ নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাসেক ক্যাপটোউইজের সঙ্গে। জবাবে পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দুটি দেশের মধ্যে বিরোধের সমাধান হতে পারে আলোচনার মাধ্যমে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই রকম কথা বলেছে।
তিনি আরো বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পর্যায়ক্রমিক চেয়ার হিসেবে পোল্যান্ড ওই অঞ্চলের বিষয়ে ঘনিষ্ঠভাবে নজরদারি করবে এবং দু’পক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবে। পরে তিনি নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেছেন, পাকিস্তানের বিষয়ে শিগগিরই পরামর্শ করা হবে।
 
উল্লেখ্য, কাশ্মীর বিষয়ে জাতিসংঘে ১১টি রেজ্যুলুশন রয়েছে। তার মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে তিনটি প্রস্তাবনায় দখলীকৃত অঞ্চলের মর্যাদার কথা বলা আছে। ওদিকে নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টকে লেখা চিঠিটি পরিষদের সদস্যদের মধ্যে বিলি করার আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যদি কোনো বিরোধ বা অবস্থা নিরাপত্তা পরিষদের সনদের অনুচ্ছেদ ৩৫ অথবা অনুচ্ছেদ ১১(৩)-এর অধীনে পরিষদের নজরে আনা হয় তাহলে বৈঠক আহ্বান করা যেতে পারে। অথবা যদি সাধারণ পরিষদ কোনো সুপারিশ করে অথবা কোনো প্রশ্ন অনুচ্ছেদ ১১(২) ধারার অধীনে নিরাপত্তা পরিষদে পাঠায় তাহলে বৈঠক আহ্বান করা যেতে পারে। অথবা যদি অনুচ্ছেদ ৯৯ এর অধীনে কোনো বিষয়ে মহাসচিব পরিষদের নজরে আনেন তাহলে অধিবেশন আহ্বান করা যেতে পারে। দৃশ্যত জাতিসংঘ সনদের অনুচ্ছেদ ৩৫-এর অধীনে নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টকে জরুরি বৈঠক আহ্বানে অনুরোধ করেছে পাকিস্তান। এই ধারায় ওই অবস্থার কথা বলা হয়েছে, যা যুদ্ধে রূপ নিতে পারে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার মুখে পড়তে পারে।
 
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বিশ্বাস করেন, ভারতের একতরফা কর্মকা-ের মাধ্যমে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার কারণে শুধু আঞ্চলিক শান্তিই হুমকিতে পড়বে এমন নয়। একই সঙ্গে হুমকিতে পড়বে বিশ্ব শান্তি। গত সপ্তাহে তিনি চীন সফর করেছেন। সেখানে নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং য়ি। ওদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীর ইস্যুতে বিশ্ববাসীর নীরবতায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। হিটলারের প্রশংসায় যেমন তুষ্ট হয়েছিল বিশ্ব, এবারও নীরবতা সেই একই অবস্থার সৃষ্টি করছে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031