ভারত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গণে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলো। এবার রাশিয়ার এক বিবৃতিতে সেই অবস্থা থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেলো নয়াদিল্লি। তাইতো মস্কোর ওই বিবৃতিকে ফলাও করেছে ভারিতের মিডিয়াগুলো।
ভারতের সংবিধান থেকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সম্বলিত ৩৭০ ধারটি বাতিল করার দীর্ঘ চারদিন পর এ নিয়ে মুখ খুলেছে পুতিন সরকার। ভারতকে সমর্থন করে দেয়া এক বিবৃতি মস্কো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সংবিধান মেনেই জম্মু-কাশ্মীর সম্পর্কে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এই ইস্যুতে একই সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানকে শান্ত থাকারও বার্তাও দিয়েছে দেশটি।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সংবিধানসম্মত ভাবেই ভারত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার পরিবর্তন করেছে ও দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করেছে। আমরা আশা করি যে এই সিদ্ধান্তের ফলে ওই এলাকার পরিস্থিতির অবনতি হবে না। রাশিয়া সব সময়েই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সুষ্ঠু সম্পর্কের পক্ষে।’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রাশিয়ার ওই বিবৃতিতে উঠে এসেছে লাহোর ও শিমলা চুক্তির কথাও। তাতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করব, শিমলা ও লাহোর ঘোষণাপত্র মেনে দুই দেশ রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে তাদের যাবতীয় দ্বন্দ্বের নিরসন ঘটাবে।’
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো মনে করছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্যের মধ্যে কাশ্মীর প্রসঙ্গে রাশিয়ার এই অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ওই পাঁচ সদস্য দেশের মধ্যে মস্কোই প্রথম সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজকে ভারতের নিজস্ব ব্যাপার বলে মন্তব্য করলো। তবে এই ইস্যুতে পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য চীন।
এদিকে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। ইতিমধ্যে ভারতের সঙ্গে সমস্ত রকম সম্পর্ক বন্ধ করেছে ইসলামাবাদ।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান। শুক্রবার বেইজিং সফরে গিয়ে চীনা সরকারের সমর্থন আদায় করে নিয়েছেন পরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। তুরস্কসহ মুসলিম দেশগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো জোড়ালো বার্তা দেননি কোনো মুসলিম সরকার প্রধান। একই সঙ্গে অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘও। তারা ভারত ও পাকিস্তানকে শান্ত থাকারও আহ্বান জানিয়েছে।