কাশ্মীর ইস্যুতে তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। এ সময় এই ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
সোমবার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এদিকে জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে একটি বিলও পাস করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ গ্রহণ করার আগে রোববার রাতেই ক্শীর উপত্যকা জুড়ে ১৪৪ ধরা আরোপ করেছিল মোদি সরকার। গ্রেপ্তর করা হয়েছে সেখানকার কয়েকশ’স্থানীয় নেতা কর্মীদের। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা। গোটা কাশ্মীরের জনগণ এখন কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মর্গান অর্টাগাস স্পষ্টভাষায় বলেন, ‘না, ভারত অধিকৃত কাশ্মীর প্রশ্নে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। সে রকম কোনো পরিবর্তন হলে আমি এখানে ঘোষণা দিতাম না। না, সত্যিই কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির দিকে ঘনিষ্ঠ নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। এসময় তিনি এই ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা চাই এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হউক। এজন্য আমরা পাক-ভারতের নেতাদের মধ্যে কাশ্মীরসহ অন্যান্য ইস্যুতে সরাসরি আলোচনাকে সমর্থন করে থাকি।’
এসময় কাশ্মীরে ভারত গণহত্যা চালাচ্ছে বলে পাক পওধানমন্ত্রী ইমরান খান যে অভিযোগ এনেছেন সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান মর্গান অর্টাগাস। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বের যে কোনো স্থানে এ ধরনের উত্তেজনার বিপক্ষে। আমরা সেখানকার লোকজনকে (ভারত সরকার) স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার এবং মানবাধিকারকে সম্মান করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
কাশ্মীরি জনগণের ওপর ভারতীয় সেনা নির্যাতনের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা উল্লেখ করেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের চলাফেরার ওপর নিযন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে, সেখানকার লোকজনকে আটক করা হচ্ছে। এ কারণেই আমরা সেখানকার পরিস্থিতি গভীরভাবে পযৃবেক্ষণ করছি।’
এসময় তিনি আরো বলেন, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকে আগেই জানান হয়েছিলো বলে নয়াদিল্লির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই সংবাদটি সঠিক নয়। ভারত যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি।’
এর আগে কাশ্মীরের চলমান অচলাবস্থায় ভারত ও পাকিস্তানকে সর্বোচ্চ সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস-ও। এসময় তিনি সিমলা চুক্তির কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, কোনো তৃতীয়পক্ষ ছাড়াই এই বিষয়টি সমাধা করা সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের এসব বক্তব্যের অর্থ হচ্ছে কাশ্মীর ইস্যুতে প্রকারান্তরে ভারতকেই সমর্থন করছে তারা। ইমরান খানের পররাষ্ট্র নীতি যে পুরোপুরি ব্যর্থ তা যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের বক্তব্যতেই স্পষ্ট।