পাকিস্তান কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের অবস্থানকে প্রত্যাখ্যান করেছে । বলেছে, অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করা ভারতের আভ্যন্তরীণ কোনো বিষয় নয়। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে জাতিসংঘ। সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. মোহাম্মদ ফয়সাল। তিনি বলেন, আমার শেষ ব্রিফিং থেকে এ পর্যন্ত ১২ জন কাশ্মীরি শাহাদাৎ বরণ করেছেন। আহত হয়েছেন কয়েক শত। তিনি আরো বলেন, দখলীকৃত কাশ্মীরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। তারা সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।
এটা হলো নির্যাতন। এখন মানবিক সঙ্কটে রয়েছে ওই এলাকা। দখলীকৃত ওই উপত্যকায় যে ভয়াবহ নির্যাতন চলছে সে বিষয়ে দৃষ্টি দেয়ার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, দখলীকৃত কাশ্মীর ইস্যুতে সব পক্ষই অভিন্ন অবস্থানে। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের জরুরি যৌথ অধিবেশন এ অবস্থানকেই অনুমোদন দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, কাশ্মীরের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়া উচিত জাতিসংঘের। এ খবর দিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের পাকিস্তানি সংস্করণ অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে ভারত। এর ফলে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়া হয়। এর জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তান বুধবার ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক খর্ব করে। ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার অজয় বিসারিয়াকে বহিষ্কার করে পাকিস্তান। স্থগিত করে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য। এরপর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের কাছে কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানায় ভারত।
কাশ্মীর ইস্যুতে উঠে এসেছে কর্তারপুর করিডোরও। ভারতের শিখ সম্প্রদায়ের জন্য ওই করিডোর খুলে দিয়েছে পাকিস্তান। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেও সেই প্রতিশ্রুতিতে অটুট থাকবে পাকিস্তানÑ এমন কথা পুনর্বার তুলে ধরেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই মুখপাত্র। ড. ফয়সাল আরো বলেন, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের একতরফা ও অবৈধ পদক্ষেপের বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চিঠি পাঠিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কাশ্মীরকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জেলখানা বানিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ইসলামাবাদ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এই অভিযোগ যাতে নয়া দিল্লি করতে না পারে এজন্য তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমরা চিঠি লিখেছি। তাতে বলেছি, সবকিছু নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত আমরা। কাশ্মীরের জনগণের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদেরকে আমরা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন দিয়ে যাব। এ সময় তিনি ভারতীয় মিডিয়ার একটি খবর প্রত্যাখ্যান করেন। ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে নিষিদ্ধ জামাতুদ দাওয়া প্রধান হাফিজ সাঈদকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেন, হাফিজ সাঈদ কারাগারে আছেন। তাকে মুক্তি দেয়ার খবরকে তিনি ভুয়া রিপোর্ট বলে আখ্যায়িত করেন।