কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ ধরে চলতি অর্থবছরের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে । অন্যদিকে, সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৩০ শতাংশ ধরা হয়েছে। এদিকে, এখন থেকে বছরে একবারই মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।
আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে গভর্নর ফজলে কবির এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। এর আগের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সরকারি খাতে ছিলো ১০ দশমিক ৯ শতাংশ।
গভর্নর বলেন, আমাদের মুদ্রানীতি ঘোষণাপত্র অর্থবছরের দুই অর্ধের জন্য দু’বারের বদলে অর্থবছরের শুরুতে সমগ্র বছরের জন্য একবার ঘোষণা করা হবে বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথমার্ধের নতুন এ মুদ্রানীতিকে কর্মসংস্থান মুখী প্রবৃদ্ধি সহায়ক উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি ৫.৫০ শতাংশ পরিমিত রেখে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত ঋণ প্রশাসনের লক্ষ্যে ঘোষিত মুদ্রানীতি আগের মত সতর্কভাবে সঙ্কুলানমুখী রয়েছে।
নতুন মুদ্রানীতিতে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের জুন পর্যন্ত লক্ষ্য ছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের (জুলাই-জুন) পর্যন্ত সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। আর অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রক্ষেপণ ছিল সাড়ে ১৬ শতাংশ। কিন্তু গত জুন শেষে এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
এটি চলতি মুদ্রানীতির ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ কম।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি বছর দু’বার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে। ছয় মাস অন্তর এ মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে প্রণয়ন হয়।
দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রার সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করতে মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট পরামর্শক আল্লা মালিক কাজমী, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান, ব্যাংকিং রিফর্ম অ্যাডভাইজার এস কে সুর চৌধুরী, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মো. আখতারুজ্জামানসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।