একটি স্কুল মাঠে দুই সন্তানের জননী তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটুয়ে হত্যার পেছনে এক নারীর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় । তার কথাতেই উত্তেজিত হয়ে উঠে স্থানীয় জনতা। শুরু হয় গণপিটুনি।

তবে এখনো সেই নারীকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। যদিও তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর প্রধান সন্দেহভাজন হৃদয়ের কাছ থেকে ওই নারীর পরিচয় বের করার আশায় তারা।

গত শনিবার উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রেনুকে উন্মত্তের মতো পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে বলে ছড়ানো উদ্ভট গুজবের মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটানো হয়। রেনুকেও পেটানো হয় ‘ছেলেধরা’র অপবাদ দিয়ে।

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন বিদ্যালয়ের গেটে সবজি বিক্রি করছিলেন প্রধান সন্দেহভাজন হৃদয়। চার বছরের শিশু তুবাকে ভর্তি করতে খোঁজ নিতে সেখানে যান রেনু।

স্কুলের গেটে এক অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলছিলেন ভুক্তভোগী নারী। এ সময় একজন নারী তার কাছে তার বাসার ঠিকানা জানতে চায়। ঠিকানা মহাখালী জানালে ওই নারীর সন্দেহ হয়। তখন তিনি প্রথম বলতে শুরু করেন, ‘এটা তো ছেলেধরা’।

এটা হৃদয় শুনে আরও কয়েকজনকে বলে। কানে কানে সেটা অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে একটা জটলা পাকিয়ে যায়।

বিষয়টি ঘোলাটে হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ রেনুকে ভবনের দ্বিতীয় প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে নিয়ে যায়। ততক্ষণে বাইরের জটলা বড় হতে থাকে, বাড়তে থাকে উত্তেজনা। এক পর্যায়ে হৃদয়সহ ১৪ জন যুবক উন্মত্ত হয়ে স্কুলের গেট ভেঙে এবং দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। কক্ষের তালা ভেঙে তারা বের করে নিয়ে আসে রেনুকে। এরপর স্কুল মাঠে ফেলে পেটানো হয় আক্রোশে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ‘যে মহিলা প্রথম জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সেই মহিলার সঙ্গে রেনুর পূর্ব পরিচিতি ছিল কি না সেটা জানা যায়নি। আমরা ওই মহিলাকে খুঁজছি।’

‘ঘটনার সময় যে কয়জন স্কুলের তালা ভেঙে মহিলাকে বের করে এনেছে তাদের নাম হৃদয় বলেছে। আমরা দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

ওই নারী রেনুর পূর্ব পরিচিত কি না, তার সঙ্গে অন্য কোনো বিরোধ ছিল কি না, এই বিষয়টিও পুলিশের তদন্তে আছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031