দুদক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ে উপ-পরিচালক ফানাফিল্ল্যা দুজনের মধ্যে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করেন। সংস্থটির সচিব দিলোয়ার বখত বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশ মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন ও প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের বক্তব্য পর্যালোচনায় তাদের কথোপকথন, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ও প্রমাণাদি দুই কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এসবের ভিত্তিতেই কারারুদ্ধ ডিআইজি মিজান ও দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুদক পরিচালক এনামুল বাছির ঘুষ গ্রহণ করেছেন, এটা অডিও রেকর্ডে প্রমাণ আছে। অন্যদিকে ডিআইজি মিজান নিজেই ঘুষ দেয়ার কথা প্রকাশ্যে বলেছেন। দুদক মনে করছে, এর মাধ্যমে ডিআইজি মিজান নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিজেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দুজনই ঘুষ লেনদেনে জড়িয়েছেন, যা দ-বিধির ১৬১, ১৬৫(১), ১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) (ক্ষমতার অপব্যবহার) ধারায় অজামিন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মিজান দুদকের মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন। ঘুষ লেনদেন মামলায় এবার সাময়িক বরখাস্ত এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হতে পারে। এদিকে ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে ডিআইজি মিজান এবং দুদকের পরিচালক বাছিরকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দুদক মিজানকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সম্মেলন কক্ষে এবং বাছিরকে পুলিশ সদর দপ্তরে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মিজান বলেছেন, মামলা হলে ফেঁসে যাবেন। তাই আত্মরক্ষার জন্য তিনি বাছিরকে ম্যানেজ করতে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেন। অন্যদিকে পুলিশের কাছে বাছির কী বলেছেন তা প্রকাশ করেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। সোমবার দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্ল্যার নেতৃত্বে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম ডিআইজি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এর আগে গত ১লা জুলাই ডিআইজি মিজানুরের আগাম জামিনের আবেদন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ নামঞ্জুর করেন। আগাম জামিন সরাসরি খারিজ করে দিয়ে তাকে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েস গ্রেপ্তারের আদেশ দেন। পরে গত ৪ঠা জুলাই মিজানের ভাগ্নে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।