রিকশা চালককে ধরে পুলিশের এক দারোগা ৭০ হাজার টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে রাজশাহীতে । রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ। ওই রিকশা চালকের নাম সুজন আলী। নগরীর গুড়িপাড়ায় তার বাড়ি।
গত রবিবার ভোরে নগরীর কোর্টবাজার এলাকা থেকে সুজনকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, তার কাছে চার গ্রাম হেরোইন পাওয়া গেছে। তবে সুজনের স্ত্রী পিংকি বেগমের অভিযোগ, সুজনের কাছে কিছুই পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পিংকি বেগম বলেন, তার স্বামী আগে মাদকসেবন করতেন। তার নামে কয়েকটি মামলাও রয়েছে। তবে চার বছর আগে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাকে একটি রিকশা কিনে দেন। তারপর থেকে তার স্বামী মাদক ছেড়ে রিকশা চালাচ্ছেন। কিন্তু গত রোববার ভোরে তার স্বামী রিকশা নিয়ে বের হলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।
এরপর এএসআই বেলাল তার স্বামীর মুঠোফোন থেকে তাকে ফোন করে থানায় ডাকেন। তিনি থানায় গেলে এক লাখ টাকা চান বেলাল। বলেন, তার স্বামীকে চার গ্রাম হেরোইনসহ আটক করা হয়েছে। এ জন্য এক লাখ টাকা দিতে হবে। তা না হলে কোর্টে চালান দেয়া হবে। পিংকি ধারদেনা করে ৭০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু তারপরেও চার গ্রাম হেরোইনসহ সুজনকে আদালতে চালান দেওয়া হয়।
বুধবার দুপুরে পিংকি বলেন, এএসআই বেলাল হিরু নামের থানার একজন দালালের হাতে টাকা দিতে বলেন। এ জন্য তিনি তার মোবাইল নম্বরও দেন। তবে তিনি টাকা দিয়েছেন এএসআই বেলালের হাতেই। তারপরেও তার স্বামীকে চালান দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তিনি পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই বেলাল হোসেন টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করেন। বলেন, তিনি হেরোইনসহ সুজনকে ধরেছিলেন। থানায় আনার পর কয়েকজন সাংবাদিকও এসেছিলেন। তারা দেখেছেন এবং ঘটনা সম্পর্কে জানেন। এএসআই বেলাল অখ্যাত একটি পত্রিকার নাম উল্লেখ করে বলেন, তিনি যে সুজনকে হেরোইনসহ আটক করেছিলেন সেই খবর ওই পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা ধরা পড়লে পুলিশের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা কথা বলেন। সুজনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা আছে। তিনি মাদকসেবন এবং ব্যবসা ছাড়েননি। তাকে হেরোইনসহই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল।