সামীম মোহাম্মদ আফজাল মঙ্গলবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) সব পরিচালক ডিজির পদত্যাগের দাবিতে তার দপ্তরের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলনের মুখে ছুটি নিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক (ডিজি) ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সামীম আফজাল তিন দিনের ছুটি নিয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব দিয়েছেন সচিব কাজী নুরুল ইসলামকে। তবে আন্দোলনকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ডিজির ছুটি নয়, পদত্যাগ চান। তিনি আবার ফাউন্ডেশন ভবনে এলে আবারও তারা অবস্থান কর্মসূচিতে যাবেন।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, তিনি আশা করছেন সামীম আফজালের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তিনি পদত্যাগ করবেন। তবে প্রতিমন্ত্রী দাবি করেন, মহাপরিচালককে পদত্যাগে চাপ দিচ্ছে না ধর্ম মন্ত্রণালয়।
গত কয়েক মাস ধরেই অস্থিরতা চলছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে। ১০ বছর ধরে মহাপরিচালকের পদে থাকা সামীম আফজালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব পরিচালক সভা ডেকে মহাপরিচালককে পদত্যাগের আহ্বান জানান। মঙ্গলবার সকালে তিনি আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে গেলে তার দপ্তরের সামনে জমায়েত হন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা ‘বিএনপি-জামায়াতের পৃষ্ঠপোষক মহাপরিচালকের অপসারণ চাই’ ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান নেন।
মহাপরিচালকের পদত্যাগ দাবি করে অবস্থানকারীরা স্লোগান দেন, বক্তৃতা করেন। এ সময় অভিযোগ করা হয়, এমন কোনো দুর্নীতি নেই যা ডিজি করেননি। তিনি ১০ বছরে ফাউন্ডেশনের সৎ কর্মকর্তাদের কোণঠাসা করে রেখেছেন। তার দুর্নীতির অংশীদারদের পদোন্নতি দিয়েছেন। চার ভাগ্নে ও তিন ভাতিজাকে প্রথম শ্রেণির পদে চাকরি দিয়েছেন। ‘দুর্নীতিবাজ’ মহাপরিচালকের অধীনে তারা কাজ করতে চান না।
সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তারা অবস্থান কর্মসূচি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করতে পারেন কি-না- এ প্রশ্নে ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার বলেন, পরিস্থিতির কারণে তারা এসব করতে বাধ্য হয়েছেন।
শনিবার নিজ দপ্তর থেকে ফাইল নিয়ে যাওয়ার পর কর্মকর্তাদের বাধার মুখে পড়েছিলেন সামীম আফজাল। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এর সত্যতা স্বীকার করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৫০টির মতো ফাইল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ডিজি। তিনি কেন ফাইল নিতে চেয়েছিলেন তা বোধাগম্য নয়। কর্মকর্তাদের বাধায় পারেননি। কর্মকর্তারা তাকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
শেখ আবদুল্লাহ বলেন, ফাউন্ডেশনের অচলাবস্থা কাটাতে মহাপরিচালক নিজেই পদত্যাগ করবেন বলে তিনি আশা করছেন। আশা করছেন, সামীম আফজাল ফাউন্ডেশনের ক্ষতি করবেন না।
প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের আগে প্রায় ১০ বছর ফাউন্ডেশনের গভর্নর ছিলেন শেখ আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ইফার কাজ রাজনৈতিক উদ্বুদ্ধকরণ নয়, ধর্মীয় কাজে উদ্বুদ্ধ করা। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক ব্যবহার কারও কাম্য নয়।
তবে আগের দিনগুলোর মতো মঙ্গলবারও নীরব ছিলেন সামীম আফজাল। কথা বলেননি গণমাধ্যমের সঙ্গে।