মোট বাজেট বরাদ্দের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের শিক্ষা বাজেটে মোট ৮৭ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে । যা জিডিপির ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। এটি এখন পর্যন্ত বাজেটে শিক্ষায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। এর আগে, গত বছর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে ২৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে দায়িত্ব দিয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকেও যুক্ত করা হয়েছে।

জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষার উন্নয়নে প্রয়োজনে বিদেশ থেকে শিক্ষক আনার কথাও বলা হয়েছে।  বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতার সময় অর্থমন্ত্রী অসুস্থ বোধ করায় তার পক্ষ থেকে বাজেট বক্তৃতায় এমন প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের শিক্ষা বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষার ওপর। এই বিষয়ে জাপানের স¤্রাট মেইজির উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেইজির সময়ে জাপান শিক্ষায় অনগ্রসর ছিল।

ওই সময় তিনি অনুধাবন করেন জাপানে ছাত্রের অভাব নেই, আছে উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব। তাই তিনি প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষিত কয়েক হাজার শিক্ষককে জাপান নিয়ে আসেন। এভাবে জাপান জ্ঞান বিজ্ঞান এগিয়ে যায় এবং পাশ্চাত্যের দেশগুলোকেও ছাড়িয়ে যায়। অর্থমন্ত্রীর হয়ে বাজেট বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের সময় এসেছে জাপানের স¤্রাট মেইজিকে অনুকরণের এবং শিক্ষার উন্নয়নে এসব কাজ আমরা কাল থেকেই শুরু করতে চাই।

এছাড়া, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত শিক্ষা বাজেটে উপযুক্ত শিক্ষক বাছাই ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে শ্রেণিকক্ষ তৈরি করার বিষয়েও জোর দেয়া হয়েছে। ন্যানো টেকনোলোজি, রোবটিক্স, ব্লক চেইন ম্যানেজমেন্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের বিষয়ে জোর দেওয়ার কথাও জানানো হয়। সেই লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল প্রাথমিক শিক্ষা’ নামে একটি পাইলট প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে। এতে ৫০৩টি মডেল বিদ্যালয়ে ইন্টার‌্যাক্টিভ ক্লাসরুম তৈরি হবে। ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন প্রণয়ন, নতুন জাতীয়কৃত ও বিদ্যমান বিদ্যালয়গুলোতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অবকাঠামো উন্নয়নের প্রস্তাব করা হয় বাজেটে। এ ছাড়াও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে ৫ বছর মেয়াদী শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রস্তাব করা হয় যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত বিষয়ে জোর দেয়ার কথা জানানো হয়।

কারিগরি শিক্ষার অগ্রগতির জন্য প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল তৈরির প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ২ হাজার ২৮১ কোটি টাকা ৬৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০০টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুলের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়াও ভূমি জরিপ শিক্ষা উন্নয়ন, ২৩ জেলায় পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়। কারিগরি শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ৪টি বিভাগীয় শহরে (সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও রংপুর) মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। মাদ্রাসা শিক্ষায় এ বছর সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয় যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৫ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। এই অর্থ মাদ্রাসায় অবকাঠামো উন্নয়ন, পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও বৈষম্য দূরীকরণে ব্যবহারে ব্যয় হবে বলেও প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়েছে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031