খুনের ঘটনা হঠাৎ বেড়েছে চট্টগ্রামে । গত সাড়ে চার মাসে চট্টগ্রামে অন্তত চল্লিশটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। আর খুনের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরীর সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়ে গেছে।
নগরসহ পুরো জেলায় থামছে না মৃত্যুর মিছিল। ঠুকনো বিষয় নিয়ে বিরোধের বলিও হচ্ছে কেউ কেউ। মাদক ব্যবসা এবং সেবনকেন্দ্রীক সংঘত আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক বিরোধ, পারিবারিক কলহসহ নানা কারণে এসব খুনের ঘটনা ঘটে।
তবে, সমাজবিজ্ঞানীরা অবাধে মাদক ব্যবসা এবং সেবনের ফলে সামাজিক বন্ধন ছিন্ন হয়ে হানাহানি বাড়ছে বলে মনে করছেন। বিশেষ করে ইয়াবা ব্যবসা অনেকটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ায় বাড়ছে এ ধরনের ঘাত-প্রতিঘাতের ঘটনা।
চলতি বছরের সাড়ে চার মাসে খুন হয়েছে অন্তত ৪০ জন। এর মধ্যে চলতি মাসেই ৫ জন নিহত হয়েছে।
মৃত্যুর মিছিলে সর্বশেষ যুক্ত হয় বুবলী আক্তার (২৭) নামে এক নারী। গত শনিবার রাত ১০টার দিকে বজ্রঘোনা এলাকায় ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারায় সে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহ আলম পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, নগরীর ১৬টি থানায় গত সাড়ে চার মাসে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৪০টি। এর বাইরে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে আরো দু’ জন। এর অধিকাংশই সরাসরি মাদক ব্যবসা এবং মাদক সেবন সংক্রান্ত হত্যাকাণ্ড।
সিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আমেনা বেগম বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়া যদি ত্বরান্বিত করা যায়, যদি অপরাধীরা জেলেই থাকে জামিন না পায় তাহলে এই ঘটনাগুলো কমানো যাবে।’
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পি পি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন বলেন, ‘মাদকের আসামিরা ৬ মাসের আগে জামিন পায় না।’
মানবাধিকার কর্মী ও ক্যাব চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আহবায়ক শাহাদাত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের সংকট তৈরি হয়েছে। এক ধরনের অস্থিরতা গ্রাস করছে সবাইকে।
সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, অতিরিক্ত মাদক ব্যবসা এবং সেবনের ফলে সামাজিক বন্ধনগুলো ক্রমশ ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। এতে বাড়ছে হানাহানি।
পুলিশের দাবি, নগরীতে গত সাড়ে চারমাসে মাদক ব্যবসা এবং মাদকাসক্তের হাতে ঘটে যাওয়া প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে অধিকাংশ অভিযুক্তকে।
মাদকসেবীরাই হিতাহিত জ্ঞান শুন্য হয়ে খুন করছে বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সেলিম জাহাঙ্গীর।