অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশে পরিণত করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ২১ বছর পরে ক্ষমতায় এসে সেই ষড়যন্ত্র নির্মূল করে আমরা একটি উন্নত সমৃদ্ধ শিক্ষিত দেশ ও জাতি গড়ে তুলছি। জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়ার এ সংগ্রামে আমাদের মূল বিনিয়োগ হচ্ছে শিক্ষা। তাইতো ২০০৮ সালে ফের ক্ষমতায় এসে নতুন শিক্ষীনীতি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে জাতির পিতা গড়ে তুলতে থাকেন নানামুখী কার্যক্রমে। তার কার্যক্রমের মধ্যে গুরুত্ব পেয়েছিল শিক্ষাখাত। তিনিই বলেছিলেন, ‘সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাখাতে পুঁজি বিনিয়োগের চাইতে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না’। শিক্ষায় বিনিয়োগ যে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ, তাও আমাদের শিখিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু।
বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর সেই কথাই মাথায় রেখে দেশের শিক্ষা উন্নয়নে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত অর্জন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষ হতদরিদ্র ছিল, তাদের মুখে ভাত ছিল না, পরনে কাপড় ছিল না। নিজের অপরিসীম ত্যাগ দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ বাঙালি জাতিকে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ এনে দেন, তিনি জাতিকে এ দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্ত করেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, বারবার আঘাত এসেছে, আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাঙালি জাতি। তাই বঙ্গবন্ধুর সেই অমর বাণী, বাঙালি জাতিকে দাবায়ে রাখতে পারবে না- সেটিও সত্যে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতার পর মাত্র তিন বছরে শুধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশই গড়ে তোলেননি জাতির পিতা, একটি সংবিধানও উপহার দিয়েছিলেন। সেই সংবিধানে শিক্ষাকে গুরুত্ব দেন তিনি। প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও জাতীয়করণ করেন।
দেশের শিক্ষার্থীদের মেধার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বেশি মেধাবী আমাদের ছেলে-মেয়েরা। অন্য দেশের ছেলেমেয়েদের দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে হাতে গুনতে হয়, আমাদের ছেলেমেয়েদের তা লাগে না। তাদের আলাদা ট্যালেন্ট আছে। তাদের সুযোগ করে দিতে হবে। সেটা হতে পারে শিক্ষার বিস্তারের মধ্য দিয়ে, প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করার মধ্য দিয়ে। আমাদের দেশের মেধাবীদের খুঁজে বের করা ও পুরস্কৃত করা একটি মহৎ উদ্যোগ।
শিক্ষাই মানুষের সবচেয়ে বড় শক্তি, বড় সম্পদ। এই সম্পদকে কেউ কেড়ে নিতে পারে না, এটা হারায় না। তাই মন দিয়ে পড়াশোনা করতে এবং দেশকে গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।