ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) বিভাগ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) রুট পারমিট, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ট্যাক্স টোকেনসহ মোটরযানের অন্যান্য প্রয়োজনীয় নকল কাগজপত্র প্রস্তুতকারী চক্রের পাঁচ সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে । গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আবদুল খালেক, আনোয়ারুল হক শিমুল, আবদুল জলিল আবদুর রহিম ও মোতালেব হোসেন। মঙ্গলবার রাজধানীর পূর্ব কাফরুল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হলেও পুলিশ বিষয়টি জানায় বুধবার। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মোটরযানের জাল রুট পারমিট ফরম, রুট পারমিট, রেজিস্ট্রেশন সনদপত্র, ফিটনেস সনদপত্র, ট্যাক্স টোকেন ফরম, বিমা ফরম, বিমা স্ট্যাম্প স্টিকার, ডকুমেন্ট প্রাপ্তি রশিদ, রেজিস্ট্রেশন আবেদন ফরম, বিআরটিএর বিভিন্ন কর্মকর্তা ও অফিসের ১৫০টি সিল, গাড়ির ডিজিটাল নম্বর প্লেট, কাগজপত্র জালকরণে ব্যবহৃত একটি ১৭ ইঞ্চি কালার মনিটর, একটি সিপিইউ, ১৬০ জিবি হার্ডডিস্ক এবং একটি প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়।
বুধবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা ১০ থেকে ১২ বছর ধরে মোটরযানের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জাল করে আসছে। গাড়ি ও চালকের ধরণ, চাহিদাভেদে তারা বিভিন্ন অংকের অর্থের বিনিময়ে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মতো সবধরনের প্রয়োজনীয় জাল সার্টিফিকেট তৈরি ও সরবরাহ করত।
ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গ্রাহক সংগ্রহ করে বিভিন্ন এডিটিং সফটওয়্যারের সাহায্যে নকল এসকল কাগজপত্র বানিয়ে নিজেরাই সিল স্বাক্ষর করে পুনরায় গ্রাহকদের সরবরাহ করত। গ্রাহকদের বেশিরভাগই যারা অদক্ষ গাড়ি চালক হিসেবে অথবা চোরাই বা ত্রুটিযুক্ত গাড়ির জন্য স্বল্প খরচে এই চক্রের মাধ্যমে জাল কাগজপত্র সংগ্রহ করে থাকে।
ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এছাড়াও প্রতারক চক্রটি দালাল হিসেবে বিভিন্ন সময় আসল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যাশী গ্রাহকদেরও জাল কাগজপত্র সরবরাহ করে প্রতারণা করত বলে তারা জিজ্ঞাসাবাদের স্বীকার করেছে। তারা ক্ষেত্রবিশেষে গাড়ি প্রতি সব কাগজপত্র তৈরির ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা আদায় করত। এ ক্ষেত্রে সরকার বিপুল রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হতো।
আবদুল বাতেন বলেন, জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও স্মার্ট রেজিস্ট্রেশন কার্ড তৈরির আগে গ্রেপ্তারকৃত আসামি মোস্তফা কামাল জয় ও তার সহযোগী শফিকুল ইসলামের কাছে পাওয়া তথ্যমতে কাফরুল এলাকায় অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ারুল হক শিমুল ও আবদুল জলিল আগেও এই অপরাধে পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তারা জামিনে বেরিয়ে আবারও এই কাজে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।