চট্টগ্রাম২০ মে: বাংলাদেশ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘যে বাংলাদেশ নিয়ে একসময় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বলা হতো ‘বাংলাদেশ ইজ নাথিং, বাট এ বটমলেস বাস্কেট। আজ আমরা গর্ব করে বলতে, বাংলাদেশ ইজ নাথিং, বাট মিরাকল। যারা বলেছিল বাংলাদেশ হবে গরিব রাষ্ট্রগুলোর মডেল। আজ তারা বলে বাংলাদেশ হচ্ছে বিস্ময়কর উত্থান। নোবেলজয়ী অর্মত্য সেন বলেছেন, উন্নয়নের দিক থেকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভারতের চেয়েও।’
শুক্রবার (২০ মে) দুপুরে লায়ন ‘জেলা ৩১৫-বি ৪’র ১৯তম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘যে বাংলাদেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষ ছিলাম, খাদ্যের অভাব ছিল। এখন ১৬ কোটি মানুষ, খাদ্যে আমরা উদ্বৃত্ত। বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি বাজার খুঁজছি কোথায় আমরা আমাদের চাল রপ্তানি করা যায়। সুগন্ধী চাল প্রতিদিনই ৫ হাজার, ১০ হাজার টন রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছি। অনুমতি লাগে চাল রপ্তানিতে। কিন্তু সাধারণ চাল রপ্তানি করারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল ৭৬ শতাংশ। এখন ১৫ শতাংশ। শিল্পের অবদান ৩০ শতাংশ। সার্ভিস সেক্টরের অবদান ৫০ শতাংশ। সাড়ে চার মিলিয়ন অর্থাৎ ৪৫ লাখ বোন-ভাই গার্মেন্টসের সঙ্গে জড়িত। আমাদের গার্মেন্টস থেকেই ২০২১ সালে এ খাতে রপ্তানি আয় হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার।’
তিনি বলেন, ‘যে বাংলাদেশে ৭২ সালে বাজেট ছিল ৭৮৭ কোটি টাকা। এক হাজার কোটি টাকাও না। গত বছর বাজেট ছিল ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এবার হতে চলেছে বাজেট ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। কোথায় এগিয়েছে গেছে বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে এক্সপোর্ট ছিল মাত্র ৩০০ মিলিয়ন। সেই বাংলাদেশে এখন ৩৫ বিলিয়ন এক্সপোর্ট হয়।’
তিনি বলেন, এবার আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। কিন্তু আমাদের অর্জন হবে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। ২০১৩, ২০১৪ সালে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হয়েছে। চট্টগ্রাম আমাদের হার্ট। চট্টগ্রাম দিয়ে সব আমদানি-রপ্তানি হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি গ্রামের ছেলে। ছোটবেলায় দেখেছি মানুষের খালি পা। ৯০ ভাগ মানুষ খালি পায়ে হাঁটত। সবার গায়ে সুন্দর জামা কাপড়। সবার বাড়িঘর সুন্দর। আগে কুঁড়েঘর ছিল, এখন টিনের ঘর।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাবেক ইন্টারন্যাশনাল ডিরেক্টর লায়ন শেখ কবির হোসেন, মাল্টিপল কাউন্সিল চেয়ারপারসন ইঞ্জিনিয়ার এমএ আউয়াল, ডিরেক্টর এনড্রোসি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, সদ্য প্রাক্তন জেলা গভর্নর সিরাজুল হক আনসারী। সভাপতিত্ব করেন জেলা গভর্নর মোস্তাক হোসাইন। উপস্থিত ছিলেন লায়ন শাহ আলম বাবুল, মনজুর আলম, শফিউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার এমআই খান, এ কাইয়ুম চৌধুরী প্রমুখ। প্রধান অতিথি কনভেনশন স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করেন।