বাংলাদেশিদের দেশের উন্নয়ন-অগযাত্রায় সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা । ঢাকায় নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি বা এনআরবি ইঞ্জিনিয়ারদের সম্মেলনে মঙ্গলবারের সান্ধ্যকালীন সেমিনারে তিনি এ আহ্বান জানান। ‘ইনোভেশন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ ফর দ্য ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন’ শীর্ষক ওই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী তার ১৩ মিনিটের বক্তৃতায় বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশের নির্বাচন, তার দলের নির্বাচনী ইশতিহার এবং সার্বিকভাবে দেশের অগ্রযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ নেতৃত্বের নানা দিক তুলে ধরেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী তার নিজের ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির উদাহরণও দেন। বলেন, কেবল একটি দেশ, যুক্তরাজ্যে পোশাক রপ্তানি করে আমি অনেক সফলতা পেয়েছি।
এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের ষোল কোটি লোককে ক্রেতায় পরিণত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বলেন, আমরা যখন ১৬ কোটি বাংলাদেশিকে ক্রেতায় পরিণত করতে পারবো, তখন ওই সমস্ত রাষ্ট্র (যাদের সঙ্গে এখন আমরা ব্যবসা করতে চাই) বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে। এই স্বপ্ন আমরা অবশ্যই দেখি। তার ইন্ডিকেশনও আছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে পশ্চিমা দুনিয়ার আগ্রহ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এমআরপির পর এখন বাংলাদেশ ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট চালু করতে যাচ্ছে। ক’মাস আগে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের সময় জার্মান কোম্পানির সঙ্গে এ নিয়ে চুক্তি হয়েছে। ইতালি কয়েক দিন আগে বৈঠক করে গেছে। তারা ছোট্ট ছোট্ট গান বোট বানাতে চায়। চট্টগ্রামের ড্রাইডকের সঙ্গে সরকার তাদের সম্পৃক্ত করে দিয়েছি। অন্যান্য দেশও এখন বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বড় বড় প্রকল্পে সম্পৃক্তায় ইউরোপীয়ান, অ্যামেরিকান এবং ওয়েস্টার্ন কান্ট্রিগুলো আগ্রহ দেখাচ্ছে। বানিজ্যিক সংশ্লিষ্টতা অনেক সমস্যার সমাধান এনে দেয় মন্তব্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটাকে ভালভাবে নিতে পারেন। অনেকে খারাপভাবেও ব্যাখ্যা করতে পারেন।
আমি বিশ্বাস করি অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকলে অনেক সমস্যার সমাধান এমনি এমনি হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে একটা ট্রেন্ড হচ্ছে, যার সঙ্গে আপনার বা আমার স্বার্থ আছে আমরা কিন্তু সহজে তার সঙ্গে বিবাদে জড়াই না। এভাবেও যদি খুব সিমপ্লিফাইড ভার্সনে বলতে চাই, সেই ধারাবাহিকতায় আমরা পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রকে মোটামুটি আমাদের বন্ধুত্বের পর্যায়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। আপনারা যে দেশেই থাকুক, কে কোথায় আছেন, কি করছেন সেটি না জেনেও আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, অতীদের তুলনায় বাংলাদেশ সম্পর্কে ওই দেশগুলোর ধারণা এখন অনেক উপরে, অনেকটাই ইতিবাচক। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায়। এক সাথেই আমরা ভবিষ্যৎ পৃথিবী গড়তে চাই। পৃথিবীর যে কোন প্রন্তের, যে কোন ধর্মের, যে কোন আয়ের, যে কোন পেশার, যে কোন স্তরের বাংলাদেশীর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দরজা খোলা জানিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া তরুণ রাজনীতিক শাহরিয়ার বলেন, আপনারা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে ই-মেইল করতে পারেন, টেক্স করতে, হোয়ার্টস-আপ করতে পারেন। আমি পারসোনালি অনেকের কাজ করে দেয়ার চেষ্টা করি, অবশ্যই ফ্রি অব চার্জ। বাংলাদেশের সন্তানরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যেভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন তাদের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায়, দৃপ্ত পথচলায়, আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশের হাতে হাত মিলানোর আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতার সমাপ্তি টানেন।