চট্টগ্রাম ১৫ মে : বৌদ্ধ ভিক্ষুকে এবার বিহারে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম বাইশারী ইউনিয়ন সদর থেকে ৫কিমি দূরে পূর্ব চাকপাড়া বৌদ্ধ বিহারের প্রবীণ ভিক্ষু মংশৈউ চাককে (৭৭) গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। শনিবারে ভোররাতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন পুলিশ। বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেছেন। নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের বলেন, পূর্বচাকপাড়া বৌদ্ধ বিহারের ভেতরের নিজ শয়ন কক্ষ থেকে ভিক্ষুর লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল লিপিবদ্ধ করা হয়। দুপুরেই জেলা সদর হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্যে লাশটি পাঠানো হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে সম্প্রতি খ্রিস্টান যাজক ও হিন্দু পুরোহিতের ওপর যেভাবে হামলা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের ধরনও তেমনি। তবে পার্বত্যাঞ্চলে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড এটাই প্রথম। যাজক ও পুরোহিতের ওপর হামলায় জঙ্গিদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিললেও ভিক্ষু হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত, তাৎক্ষণিকভাবে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ সুত্র জানায়, শনিবার ভোররাতে পুর্বচাকপাড়া বৌদ্ধ বিহারে থাকা প্রবীণ ধর্মীয় নেতা ভিক্ষু মংশৈ চাকের গলাকাটা লাশ আবিষ্কার করেন বিহারের অন্য ভিক্ষুরা। নিয়ম মতে শনিবার ভোরে এই ভিক্ষুকে খাবার দেয়ার জন্যে বিহারের ভেতরে তার কক্ষে যান অন্য ভিক্ষুরা। এ সময় তার গলাকাটা লাশ দেখতে পান তারা। বিহারের দরজা–জানালা খোলা ছিল। কোন জিনিসপত্র লুট হয়নি, লাইটও ছিল অক্ষত। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাত ৯টায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছিল। সম্ভবত ওই সময় বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হত্যা করা হতে পারে। ঘটনাস্থলে দুর্বৃত্তদের পায়ের চিহ্ন রয়েছে বলেও পুলিশ বলছে। উগ্রপন্থীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে পুলিশ ও স্থানীয় নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম ধারণা করছেন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পার্বত্য জেলা ভিক্ষু কল্যাণ পরিষদ নেতৃবৃন্দ। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, বাইশারীতে বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যার ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করা হচ্ছে।
এদিকে এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে বেলা ৩টায় বাইশারীতে দ্রুত পৌঁছেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। তিনি সেখানে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখার তাগিদ দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে বজায় থাকে এবং সার্বিক আইনশৃংখলার বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় সেদিকে কঠোর অবস্থানে থাকার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেন। এ সময বিজিবির স্থানীয় কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।