বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুন্ড আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম দিদারের বিরুদ্ধে পরিবহন শ্রমিক নেতাকে মারধর এবং চাঁদা দিতে হবে- এমন চাপ সৃষ্টির অভিযোগ এনে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৫ জেলায় ৪৮ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে । আগামী সোমবার ভোর ৬টা থেকে ১৬ই জানুয়ারি ভোর ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট পালন করা হবে বলে শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। তবে সংসদ সদস্য দিদারুল আলম দিদার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, বৃহ¯পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় এমপি দিদারুল আলম দিদার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ স¤পাদক অলি আহমদ ও নগরীর অলঙ্কার মোড় থেকে সীতাকুন্ড রুটে চলাচলকারী ৮নং রুটের মালিক সমিতির নেতাদের তার বাসায় ডাকেন। এ সময় অলঙ্কার থেকে সীতাকুন্ড রুটে গাড়ি চলাচলের নিয়ন্ত্রণ তার কাছে ছেড়ে দিতে বলেন। মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জানায়, ট্রেড ইউনিয়নের আইন ও শ্রমিকদের অর্পিত দায়িত্ব শ্রমিকের মতামত ছাড়া ছেড়ে দেয়া সম্ভব নয়। তাদের এ কথার জবাবে এমপি তাদেরকে বলেন, তাকে প্রতিমাসে ২ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।
তাতেও সম্মত না হওয়ায় এমপি দিদার এক পর্যায়ে ৮নং রুটে মালিক সমিতির যুগ্ম স¤পাদক খোরশেদ আলমকে নিজ হাতে মারধর শুরু করেন। এই ঘটনার কারণ জানতে চাইলে এমপি দিদারুল আলম উত্তেজিত হয়ে শ্রমিক নেতা অলি আহমদের দিকে তেড়ে গিয়ে তাকেও মারধর করেন।
প্রয়োজনে রিভলবার দিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়ে বেরিয়ে যেতে বলেন।
সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে সংগঠনের এক জরুরি সভায় ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে আগামি সোমবার ভোর ৬টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৫ জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় ৪৮ ঘন্টা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘট পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মুছা। জানতে চাইলে ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট ডাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহাম্মদ মুছা বলেন, এমপি দিদারের বিরুদ্ধে চাঁদার জন্য চাপ সৃষ্টি ও মারধরের অভিযোগে সভায় ধর্মঘটের এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সংসদ সদস্য দিদারুল আলম দিদার দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, শ্রমিক ফেডারেশনের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং শ্রমিক নেতা খোরশেদ আলমই ৮নং রুটের পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি করছে। চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে সে বোমা বানায়। সে বিএনপি-জামায়াতের লোক। বিএনপির ওপর মহলের নির্দেশে সে গাড়ির ওপর বোমা মারে। এ কথা বলে জরুরি মিটিংয়ে আছেন বলেই ফোন কেটে দেন এমপি।