একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন রবিবার বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে। ৪৮ ঘণ্টা আগে শুক্রবার সকাল থেকে নির্বাচনী প্রচার বন্ধ হয়ে গেছে। এবারের নির্বাচনী প্রচারে অতীতের মতো ‘ভারত ইস্যু’ নিয়ে প্রধান দুই দলকে উত্তাপ ছড়াতে দেখা যায়নি। অপরদিকে ভারতকেও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।
ভারত শুধু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাওয়া ছাড়া কোনো বক্তব্য দেয়নি। কী এমন ঘটল যে ভারত কিছু বলছে না?
ভারতের একজন কূটনীতিক ঢাকায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলেছেন এসব বিষয় নিয়ে। শুক্রবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের অনলাইন ভার্সনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়।
আগের নির্বাচনগুলোর মতো বিএনপি এবার ভারত বিরোধীতা করে কোনো বক্তব্য দেয়নি। দুর্নীতির দায়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিগত নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ‘ভারতমুখী’ বলে প্রচার চালাতেন। আর স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াত ইসলামিকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিকে ভারতবিরোধী হিসেবে উপস্থাপন করতেন। এবার সে পরিস্থিতি নেই।
সম্প্রতি ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বিএনপি তার ভারতবিরোধী অবস্থান থেকে সরে এসেছে। সেটা ভারতকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।’
এ ব্যাপারে ভারতের ওই কূটনীতিক বলেন, ‘এটা খুবই চমকপ্রদ যে নির্বাচনী প্রচারের সময় দুটি প্রধান দল ভারতের কথা উল্লেখ করেনি। হিযবুত তাহরীরের মতো একটি ইসলামী গোষ্ঠী ভারতবিরোধী কিছু বক্তব্য দেওয়া ছাড়া বিএনপি বা আওয়ামী লীগের কোনো নেতা নির্বাচনী প্রচারে ভারতবিরোধী অনুভূতি নিয়ে কোনো কথা বলেননি।’
ভারতীয় ওই কূটনীতিক বলেন, ‘আমি মনে করি, তারা (বিএনপি) হয়তো বুঝতে পেরেছে ভারতকে দূরে সরিয়ে রেখে বিএনপির কোনো লাভ হয়নি।’
সাবেক কূটনীতিক ও খালেদা জিয়ার পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ এ ব্যাপারে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘এবার ভারত কোনো ইস্যু নয়। দিল্লির মসনদে বিজেপি নাকি কংগ্রেস বসল, সেটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। একইভাবে ভারত সরকারেরও উচিত নয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপি জিতল, সেটা নিয়ে না ভাবা।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করার পর দিল্লি হাসিনা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারকে পুনর্নির্বাচনে কোনো চাপ দেয়নি, উল্টো হাসিনার জয়কে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিএনপির অনেকে ওই নির্বাচন বর্জন করাকে গুরুতর ভুল বলে মনে করেছেন।
‘ভারতের পক্ষে যা কাজ করেছে, তা হলো কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ভারত অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। শীর্ষপর্যায়ে কয়েকটি ক্ষেত্রে সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত পাঁচ বছরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে ১০টি বৈঠক হয়েছে, ৬টি ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে, তাদের মধ্যে পাঁচবার টেলিফোনে কথা হয়েছে। দুই নেতা যৌথভাবে ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েছেন। তারা ৯০টির বেশি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।’