ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না মন্তব্য করে দ্রুত নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন । তিনি বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার কোন পরিবেশ এখনও তৈরি করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর এখনও আমাদের সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করতে হবে, এদেশের মানুষ এটা কখনও আশা করেনি। এবার যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশে খুন খারাবি, হত্যা গুম, বেড়ে যাবে। দেশে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। দেশের এহেন পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী থাকবে বলেও জানান তিনি।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ‘নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮’ ঘোষণা করেন। ইশতেহারে ইসলামী আন্দোলন দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত উন্নত ও কল্যাণরাষ্ট্র গড়তে ৩০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এরমধ্যে ২১ দফাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে দলটি। কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনা হবে। শুধু দুর্নীতি-সন্ত্রাস দমন নয়; নির্মূলকরণ কর্মসূচিও গ্রহণ করা হবে। জনমতের যথার্থ প্রতিফলন, সুষ্ঠু নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংসদ নির্বাচন পদ্ধতির আমূল সংস্কার করা হবে। দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও অনৈতিক পেশার সঙ্গে জড়িতদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করা হবে। কৃষি ও শিল্পবিপ্লব ঘটিয়ে বেকার ও দারিদ্র্যমুক্ত এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তোলা হবে। খুন, গুম, মিথ্যা ও গায়েবী মামলা, জুলুম, নির্যাতন ও দুঃশাসনের কবল থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করা হবে। জনগণের বাক-স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের সকল স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। নারীদের শুধু সমঅধিকার নয়; অগ্রাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করা হবে।
এছাড়াও খাদ্যদ্রব্যের স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে ২০ ভাগ কমানো হবে, জ্বালানী তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম ৩০ ভাগ কমানো, গণপরিবহনের লাইন্সেস ফি অর্ধেক করা, গণপরিবহনের ভাড়া ৩০ ভাগ কমিয়ে আনা, জমির খাজনা, টোল ও হোল্ডিং ট্যাক্স ৩০ ভাগ কমিয়ে আনা, কৃষকদের সার ও বীজের মূল্য অর্ধেক মূল্যে দেয়া হবে, শ্রমিকদের বেতন দ্বিগুন করা, সবার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা ব্যয় ৫০ ভাগ কমিয়ে আনা, সব মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জেন এবং খাদেম, সব মন্দির ও গীর্জার প্রধানদের ও সেবকদের সম্মানজনক ভাতা দেয়া, আয়কর ও ভ্যাট ৩০ ভাগ কমানো হবে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও লোডশেডিং বন্ধ করা, দেশীয় ও বৈদেশিক ঋণ ১৫ বছরের মধ্যে শূন্যের কোঠায় আনা এবং সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন ২৫ ভাগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।
ইশতেহার ঘোষণায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোখতার হোসেন, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরি, ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ প্রমূখ।