গণফোরম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে সৃষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন । এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করে এই দুঃখ প্রকাশ করেন।
এতে তিনি উল্লেখ করেছেন-
মহান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জীবনে অসামান্য তাৎপর্যপূর্ণ। আমি প্রত্যেক বছরের মতো এবারেও শহীদ বুদ্ধজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মিরপুর স্মৃতিসৌধে গিয়েছি।
এই দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল, যার মধ্যে আমার অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও ছিলেন।
১৯৭২-৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য প্রণীত আইনগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারা আমার কাছে সর্বদাই আবেগ অনুভূতির বিষয়।
আমি বিশ্বাস করি, সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শুধুই শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য যান।
১৪ই ডিসেম্বর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে স্মৃতিসৌধের বেদিতে দাঁড়িয়ে আমি বলেছিলাম, আমরা কত মেধাবী সন্তানদের হারিয়ে তবে স্বাধীনতা পেয়েছি।
তখন হঠাৎ করে বেদিতেই আমার কাছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলো। আমি তাৎক্ষনিক সবিনয়ে বলি, আজকের এই দিনে, যেখানে আমাদের গভীর অনুভূতির বিষয়, এই বিষয়ে এখানে কোন মন্তব্য করতে চাই না। পুনরায় একই প্রশ্ন তুললে আমি একই মনোভাব ব্যক্ত করি।
কিন্তু তৃতীয়বার ভীড়ের মধ্যে থেকে কোথাও অনবরত দুই থেকে তিনবার আমি শুধু ‘জামাত জামাত’ শুনতে পাই। তখন আমার খুবই খারাপ লেগেছিলো। এবিষয়ে আমি প্রশ্নকর্তাকে থামানোর চেষ্টা করেছিলাম। আমার বক্তব্য কোনভাবে কাউকে আহত বা বিব্রত করে থাকে, তাহলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
সকলে অবগত আছেন যে, আমি সারাজীবন সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সামিল থেকেছি।
আশা করি, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানগণ তাদের জীবনের বিনিময়ে যে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা আমরা সকলে মিলে গড়তে সক্ষম হবো।
উল্লেখ্য, গতকাল মিরপুর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবদেন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা মুখামুখি হন। এ সময় এক সাংবাদিক জামায়াত প্রসঙ্গে তার মনোভাব জানতে চান। তখন তিনি উত্তেজিত হয়ে ওই সাংবাদিককে লক্ষ্য করে ‘খামোশ’ বলেছিলেন। এ ঘটনা বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।