প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী নির্বাচনের পর গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের সঙ্গে কথা বলে বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পরিবর্তন আনা হবে বলে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা জানান।
গওহর রিজভী বলেন, ‘উদ্দেশ্য অর্জন না হলে একাধিকবার আইনের পরিবর্তন হতে পারে। বিভিন্ন সময় আইন প্রয়োগে ত্রুটি ধরা পড়ায় পার্বত্য ভূমি আইনে পাঁচবার সংশোধন আনা হয়েছে। সুতরাং ডিজিটাল আইনেরও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা যেতে পারে, আনা হবে। নির্বাচনের পর গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের সঙ্গে আরও কথা বলে এটার পরিবর্তন আনা হবে।’
মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে একটি বাধা তৈরি হলে গোটা সমাজব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন গওহর রিজভী। বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হলো সভ্যতার ভিত্তি। মতপ্রকাশ ছাড়া সভ্য সমাজ তৈরি হতে পারে না। মতপ্রকাশকে কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণও করা যাবে না। মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে একটি বাধা তৈরি হলে গোটা সমাজব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে।’
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা আইন দিয়ে ঠেকানো যায় না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রকৃত অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় এলে আইন দিয়ে ঠেকানো যায় না। যেখানে দুর্নীতি থাকে, সেখানেই দারিদ্র্য থাকে। দুর্নীতিমুক্ত না করে কোনো দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা যায় না।’
‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা ও ‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৮’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংস্থাটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘ডিজিটাল আইন তৈরি করে একটি ভীতির পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। তাই এই আইনের পরিবর্তন যত দ্রুত সম্ভব আনা দরকার। আমরা এই আইনের সমালোচনা এজন্যই করছি, কারণ এই আইনের মাধ্যমে বিবেক বন্দী আছে। বিশেষ করে এই ডিজিটাল আইনের পরিবর্তন না করা হলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হবে।’
আলোচনার পর টিআইবির অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৮ এর বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ বছর ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মিলিয়ে ছয়জন প্রতিবেদক ও দুটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়।