যাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্তত ১২ জন বিএনপি।ঢাকার ২০টি আসনে অন্তত ৬১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা হয়েছে। এর বাইরে আরও কয়েকজনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপির শরিক গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মণ্টুসহ দলের অন্তত দুইজন নেতা আছেন।
রবিবার ঢাকা জেলা প্রশাসক এবং ঢাকার বিভাগীয় প্রশাসকের কার্যালয়ে এই যাচাই বাছাই চলে। রাজধানীর ১৫টি আসনের যাচাই বাছাই হয় বিভাগীয় প্রশাসকের কার্যালয়, বাকিগুলো হয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
ঢাকা-১ আসনে বিএনপির আবু আশফাক এবং ফাহিমা হোসেন জুবলীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। যে কারণে এখানে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। আবু আশফাক নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করলেও নির্বাচন কমিশন বলছে, পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি। তাই বাতিল করা হয়েছে।
মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অপর বিএনপির প্রার্থী ফাহিমা হোসাইন জুবলীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
এছাড়া জাকের পার্টির সামসুদ্দিন আহম্মেদ, জাসদের আইয়ুব খান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
ঢাকা-২ আসনে বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে দুর্নীতির মামলায় সাজা হওয়ার জন্য। তবে এই আসনে তার ছেলে ইরফান ইবনে আমান অমিতের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মারুফ খান, মুসলিম লীগের সৈয়দ মইনুদ্দিন রিপন ও কমিউনিস্ট পার্টির সুকান্ত শফি চৌধুরীর মনোনয়নপত্র।
ঢাকা-৩ আসনে গণফোরামের মোস্তফা মহসীন মন্টু, ইসলামী আন্দোলনের সুলতান আহমেদ খান, জাতীয় পার্টির মনির হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুল হকের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী সেলিম ভূঁইয়ার মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এখানে বিএনপির বিকল্প প্রার্থী আছে।
ঢাকা-৬ আসনে সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে ঋণখেলাপির কারণে। এই আসনেও বিএনপির আরেক প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষিত হয়েছে।
ঢাকা-৭ আসনে ১৯ জনের মধ্যে চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এরা হলেন বিএনপি নাসিমা আক্তার কল্পনা । সোনালী ব্যাংকে ঋণখেলাপি হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত এসেছে।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোতালেব ও মাসুদুর রহমান খোকন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নাজমুল হকের প্রার্থিতা টেকেনি।
ঢাকা-৮ আসনে সাতজনের মনোনয়নপত্র বাতিল এবং একজনের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টি মাহমুদা রহমান মুন্নী, ইসলামিক ফ্রন্টের এস এম সরওয়ার, জাতীয় পার্টির আরিফুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মাদুল হাসান ও রহমত উল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।
ঢাকা-৯ আসনে বিএনপি প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এর আগে রিটার্নিং কর্মকর্তা ঋণ খেলাপি হিসেবে তার প্রার্থিতা স্থগিত করেন। তখন আফরোজা দুই ঘণ্টা সময় চান। ওই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও প্রার্থীর পক্ষ থেকে কোনও ধরনের কাগজপত্র জমা না দেওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কে এম আলী আজম।
ঢাকা-১০ আসনে দশজন প্রার্থীর মধ্যে একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তিনি গণফোরামের খন্দকার ফরিদুর আকবর। ঋণ খেলাপের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির হেলাল উদ্দিনের মনোনয়নপত্র স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি রশিদ দেখাতে পারলে মনোনয়নপত্র বহাল হবে।
ঢাকা-১১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান মিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
ঢাকা-১২ আসনে আটটি মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে। সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা হয়েছে।
ঢাকা-১৩ আসনে ১২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঢাকা-১৪ আসনে ১৩টির প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এরা হলেন ইসলামিক ফ্রন্টের শাহাজাদা সাইফুদ্দিন, স্বতন্ত্র আজমীরা সুলতানা, বিএনপির সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক, জাকের পার্টির কায়সার হামিদও জাকির হোসেন।
ঢাকা-১৫ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১৬ জন। তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। ঋণ খেলাপির অভিযোগে জাতীয় পার্টির মুকুল আমিন এবং ভোটারদের ভুয়া স্বাক্ষরের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সলিমুদ্দিনের মনোনয়নপত্র টেকেনি।
ঢাকা-১৬ আসনে দশজন প্রার্থীর মধ্যে চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তারা হলেন: গণফোরামের খন্দকার ফরিদুল আকবর (ঋণ খেলাপি), বিএনপির এ কে মোয়াজ্জেম হোসেন (ঋণ খেলাপি), জাতীয় পার্টির আমানত হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইসমাইল হোসেন।
ঢাকা-১৭ আসনে ২৭ জন প্রার্থীর মধ্যে দুইজনের স্থগিত ও ১১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। যাদের মনোনয়নপত্র স্থগিত হয়েছে তারা হলেন, জেএসডির নজরুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের আকবর হোসেন পাঠান (চিত্রনায়ক ফারুক)।
বাতিল হয়েছে নাজমুল হুদা, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাসির, বিকল্প ধারার আরিফুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইনামুল হক, বিএনপির শওকত আজিজ, স্বতন্ত্র প্রার্থী লেলিন চৌধুরী, মামুনুর রশীদ, আনিসুজ্জামান খোকন, আব্দুর রহিম, শামসুল হুদা চৌধুরী রুবেল আজিজের মনোনয়নপত্র ।
ঢাকা-২০ আসনে ধামরাই উপজেলার চেয়ারম্যান বিএনপির তমিজ উদ্দিন পদত্যাগপত্র জমা না দেয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ঋণ খেলাপি ও আয়কর না দেয়ার দায়ে বিএনপির বিকল্প প্রার্থী সুলতানা আহমেদের মনোনয়নও বাতিল করা হয়েছে।