বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমান ঢাকা-২ আসনে ধানের শীষ নিয়ে লড়তে চান । পাশের আসন ঢাকা-৩ থেকে মনোনয়ন পাবেন, এমন আশায় আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

কিন্তু বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এই দুই নেতার আসনেই চোখ রেখেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। যেকোনো একটি আসন তিনি জোটের কাছে চাইবেন, এখন পর্যন্ত এটাই শোনা যাচ্ছে। গণমাধ্যমকেও তিনি তার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

ঐক্যফ্রন্ট নেতার মন রাখতে হলে বড় ছাড় দিতে হবে বিএনপিকেই। ঢাকা-২ আসনটি মন্টুকে ছেড়ে দেওয়া হলে বঞ্চিত হবেন আমান উল্লাহ আমান। অন্যদিকে ঢাকা-৩ আসনটি মন্টুকে দেওয়া হলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে থামতে হবে।

এখন পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হয়নি। তাই এখনই স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, কী থাকছে আমান আর গয়েশ্বরের ভাগ্যে।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা আগে ঢাকা-৩ আসনের মধ্যে ছিল। তবে ২০০৮ সালে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হলে এই উপজেলাটি ঢাকা-২ ও ঢাকা-৩ আসনে ভাগ হয়ে যায়।

১৯৮৬ সালে ঢাকা-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মোস্তফা মহসিন মন্টু। ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি।
পরে ১৯৯১ সালে একই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিএনপির আমান উল্লাহ আমানের কাছে পরাজিত হন মন্টু।

ঢাকা-৩ আসন থেকে চারবার নির্বাচিত আমান উল্লাহ আমান এবার ঢাকা-২ আসন থেকে বিএনপির টিকিটে লড়তে চান। ২০০৮ সালে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মতিউর রহমান।

আসনটি যেন হাতছাড়া না হয়, তাই বিকল্পও ভেবে রেখেছেন আমান উল্লাহ। এই চিন্তা থেকে নিজের ছেলের নামেও সংগ্রহ করেছেন মনোনয়নপত্র।

অন্যদিকে বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকা-৩ আসন থেকে দলের মনোনয়ন চান। ২০০৮ সালে তিনি এই আসন থেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী নসরুল হামিদ বিপুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে না আসায় গয়েশ্বরকে আর বিপুর মুখোমুখি হতে হয়নি। তবে এবার তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছে, এই ভাবনা থেকেই মাঠে আছেন।

ঢাকা-২ আসনে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন, এই আসনে আমান উল্লাহ আমানের বিকল্প বিএনপিতে নেই। এই আসনে বিএনপির জয় নিশ্চিত করতে হলে আমানকেই প্রার্থী করতে হবে।

অন্যদিকে ঢাকা-৩ আসনে প্রার্থী হতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিয়েছেন, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ-সম্পর্ক রেখেছেন। এ ছাড়া যেকোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারাই বলছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মন রাখতে গিয়ে বিএনপিকে অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। এতে দলের অনেক নেতা মনোনয়নবঞ্চিত হতে পারেন। তবে ঐক্যের স্বার্থে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে তারা প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন। যাকে দিয়ে ঐক্যের জয় নিশ্চিত হবে, তাকেই প্রার্থী করা হবে।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আসন বণ্টন নিয়ে এখনো বৈঠক করা হয়নি। ঐক্যফ্রন্ট ও জোটের শরিকরা কেউ কেউ তালিকা দিচ্ছেন। শিগগির নিজেদের মধ্যে এবং ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের সঙ্গে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সবার মত নিয়ে যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের জোটগত মনোনয়ন দেওয়া হবে।’

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031