বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার প্রতিরোধে তদারকি করতে চট্টগ্রামের বিভাগের ১১ জেলায় কর্মরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন । তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে ও পরে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও অসামাজিক কার্যকলাপসহ দেশে যাতে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে জন্য চলতি মাস থেকে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের সভা, বিভাগীয় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা, জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় সভা ও বিভাগীয় রাজস্ব সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের অফিস এসব সভার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সড়ক, নৌপথ ও সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মাদকের সাথে অস্ত্রের চালান আসতে পারে। বিভিন্ন ধরনের অপরাধের ঘটনাও বৃদ্ধি পেতে পারে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করার জন্যও নজরদারি বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সরকার ভর্তুকি দিয়ে বিদেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করছে। পেট্রোল পাম্প থেকে ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেল যাতে পাচার না হয় সে বিষয়ে সীমান্তবর্তী জেলা প্রশাসকগণকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সীমান্তবর্তী এলাকার প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা সঠিক দায়িত্ব পালন করলে তেল পাচার বন্ধ হবে।
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার, চোরাচালান রোধ, জঙ্গি-সন্ত্রাসী এবং চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অপরাধীরা আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। এ জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বয়ভাবে কাজ করতে হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ে নগরীতে যাতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি না হয় সে লক্ষ্যে পুলিশ সর্বোচ্চ নজরদারিতে থাকবে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। ভোটারদের ভয়ভীতি, ভোট কেন্দ্র দখল, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চলবে না। মাদক, অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পৃথক সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, বিভাগীয় পরিচালক (স্থানীয় সরকার) দীপক চক্রবর্তী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামী, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আদিল চৌধুরী, ডিজিএফআইয়ের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বশির আহমদ, কোস্টগার্ডের অধিনায়ক এস এম মঈন উদ্দিন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-মহাপরিচালক মো. সামছুল আলম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান একটি চলমান বিষয়। এটি চলমান থাকবে। কিন্তু এর বাইরে বৈধ অস্ত্রও অনেক সময় অবৈধভাবে ব্যবহার হওয়ার অভিযোগ আছে। এই অবৈধ ব্যবহার ঠেকাতে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে বজায় থাকে, মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে এবং নির্বাচনের পরও যাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজ করতে বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জঙ্গিরা যাতে নির্বাচনে নাশকতা না করতে পারে, সেজন্য পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে সবাই সেভাবে কাজ করছে।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | ||
6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 |
13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 |
20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 |
27 | 28 | 29 | 30 | 31 |