বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের দুই দফা সংলাপেও কার্যত কোনও সমাধান না আসায় আন্দোলনকেই বিকল্প ভাবছেন । দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে আন্দোলন কর্মসূচিও চান তারা। আর সেটা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও।
বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষে বিকাল থেকে রাত অবধি ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে তারা নির্বাচন এবং আন্দোলনের ব্যাপারে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। দায়িত্বশীল নেতারা এসব মতামত লিপিবদ্ধ করে রাখেন।
বিএনপির একটি সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় বিভিন্ন স্তরের নেতাদের মতামত নিয়ে দলের চেয়ারপারসনকে অবহিত করা হবে যে কোনো প্রক্রিয়ায়। লন্ডনে অবস্থানকারী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছেও পাঠানো হবে। পরবর্তিতে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন।
বৈঠকে থাকা কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ নেতা মনে করেন সরকার ঘটা করে সংলাপ করলেও খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়সহ উল্লেখযোগ্য কোনো দাবি পূরণ হয়নি। এমনকি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কোনো আশার ইঙ্গিতও পাওয়া যায়নি। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। এটা হবে আত্মহত্যার শামিল।
এদিকে তফসিল ঘোষণাসহ নির্বাচনের সময় খুব বেশি না থাকলেও এখনই কঠোর কর্মসূচির বিষয়ে ভাবার পরামর্শ দিয়েছেন কেউ কেউ। বিএনপির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা টাইসকে বলেন, আন্দোলন ছাড়া উপায় নেই। এই মতামতই বেশিরভাগ নেতা দিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে সবাই মতামত দিয়েছেন। তবে কেউ কেউ সংলাপ নিয়ে এখনো আশাবাদী বলেও জানিয়েছেন।
তবে কোন ধরণের কর্মসূচির বিষয়ে মতামত এসেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শাস্তিপূর্ণ কর্মসূচি, জনসম্পৃক্ততামূলক কর্মসূচির বিষয়ে পরামর্শ এসেছে। যেমন ইসি কার্যালয় ঘেরাও এই ধরণের।
একজন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যতটুকু জেনেছি সকল মতামত চেয়ারপারসন এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হবে। পরে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।’
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ফাহিমা মুন্নী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা সবাই মন খুলে মতামত দিয়েছি। সংলাপ নিয়ে ফলাফল কি হলো, সামনে করণীয় কি, আন্দোলন হলে কর্মসূচি কি হতে পারে এ বিষয়ে মতামত দিয়েছে সবাই। এখন হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নেবে।’