চট্টগ্রাম, ০৮ মে: পররাষ্ট্র দপ্তরে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মতো ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো’ বন্ধ করতে ইসলামাবাদকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।
এর পাশাপাশি ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অপব্যাখ্যা বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
রবিবার দুপুরে পররাষ্ট্র দপ্তরে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের কাছে ঢাকার এ অবস্থান ব্যক্ত করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গত বৃহস্পতিবার খারিজ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রয়েছে।
এ রায়ের সমালোচনা করে শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দণ্ডের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এ ব্যাপারে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া অনুসরণ করছি। বিবৃতিতে ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চলমান বিচারকে ‘বিতর্কিত’ বলা হয়েছে।
সাংবাদিকদের কাছে এর বিবৃতির প্রতিক্রিয়া জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া আমাদের হতাশ করেছে। আমরা কখনোই আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও উদ্বেগকে স্বাগত জানাই না। বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার পরও তারা এটি করছে। তারা বলছে যে ব্যথিত হয়েছেন। কিন্তু আমরা যাদের বিচার করছি, তারা বাংলাদেশের নাগরিক।’
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭৪ সালে যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির কথা বলা হচ্ছে, সেখানে উল্লেখ ছিল পাকিস্তানের যে ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল, তাদের বিচার করা হবে না। ওই চুক্তিতে কিন্তু বলা হয়নি যেসব যুদ্ধাপরাধী বাংলাদেশের নাগরিক, তাদের বিচার করা যাবে না।
শাহরিয়ার বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধীরা পাকিস্তানের হয়ে কাজ করেছেন। তাই তাদের জন্য সেই জায়গা থেকে পাকিস্তান ব্যথিত হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি এটিকে বিপজ্জনক মনে করি, কারণ মানবতাবিরোধী বা যুদ্ধাপরাধীরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আশ্বস্ত করার একটি জায়গা খুঁজছেন। পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসেবে তাদের পাশে থাকবে, এ রকম একটি বার্তা বোধ হয় দিতে চাইছে।’
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, তা না হলে নিজামীর বিচারে পাকিস্তান কেন ব্যথিত হবে?