৭৩ জন প্রভাবশালী ইয়াবা কারবারির (গডফাদার) নাম উঠেছে ইয়াবার হালনাগাদ তালিকায় কক্সবাজারের। তালিকার শীর্ষে আছেন কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ ও উখিয়া) আসনের আওয়ামী লীগের বিতর্কিত সাংসদ আবদুর রহমান বদি। খবর প্রথম আলো

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আগের একাধিক তালিকার মতো এবারও সাংসদ বদির পাঁচ ভাই আবদুল শুক্কুর, আবদুল আমিন, মৌলভি মুজিবুর রহমান, মো. সফিক, মো. ফয়সাল, ভাগনে সাহেদুর রহমান নিপু (ওসি আবদুর রহমানের ছেলে), বেয়াই শাহেদ কামাল, ফুফাতো ভাই কামরুল হাসান রাসেলসহ ঘনিষ্ঠ আরও কয়েকজনের নাম রয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান শনিবার কক্সবাজার । মহেশখালী ও সৈকতের একটি হোটেলে আলাদা দুটি মাদকবিরোধী সমাবেশে মাদক চোরাচালান ও ইয়াবা গডফাদারদের ব্যাপারে কড়া হুঁশিয়ারি দিতে পারেন তিনি। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণের জন্য কয়েক মাস আগে টেকনাফে র‌্যাবের পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবি-কোস্টগার্ড প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করলেও গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়ার ভাষ্য, তালিকাভুক্ত ইয়াবা গডফাদারের কেউ এলাকায় নেই। দেশের বাইরে অবস্থান করে ইয়াবা চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছেন।

ইয়াবার নতুন তালিকা প্রসঙ্গে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমদ গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, মাদকের তালিকা হালনাগাদ হয়েছে। সর্বশেষ তালিকায় কক্সবাজার জেলার ৭৩ জনের নাম এসেছে। তাঁদের ধরতে টেকনাফ-কক্সবাজারে অভিযান চলছে।

সব তালিকায় বদি

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন একাধিক বাহিনীর তালিকায় সাংসদ বদিসহ তাঁর পরিবারের অন্তত ২৬ জনের নাম আছে। এ প্রসঙ্গে সাংসদ বদি বলেন, ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আড়াল করতে তিনিসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছেন কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তিনি বরাবরের মতো বলেন, তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন।

তালিকার ৬ নম্বরে আছে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আহমদের নাম। তিনি সাংসদ বদির ঘনিষ্ঠ। ৭, ৮ ও ৯ নম্বরে আছে জাফর আহমদের চার ছেলে মোস্তাক মিয়া, দিদার মিয়া, মো. শাহজাহান (টেকনাফ সদর ইউপি চেয়ারমান) ও মো. ইলিয়াছের নাম। জাফর আহমদ বলেন, সব তালিকায় তিনিসহ তাঁর ছেলেদের নাম আছে। কিন্তু কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।

তালিকার ২ নম্বরে আছেন হাজি সাইফুল করিম। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ। পরিবারের দাবি, তিনি দেশের বাইরে। সাইফুল ইয়াবা ব্যবসায়ী নন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাদকের কবল থেকে রক্ষা এবং ইয়াবার শীর্ষ গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সেপ্টেম্বর মাসে ৭৩ জনের নতুন তালিকাটি তৈরি করে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সোমেন মণ্ডল বলেন, ৭৩ গডফাদারসহ কক্সবাজারের ইয়াবা কারবারিদের ধরতে ঘরে ঘরে অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী।

গত ৩ এপ্রিল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৈরি সর্বশেষ ইয়াবা তালিকায় স্থান পেয়েছে কক্সবাজারের ১ হাজার ২৫০ জনের নাম। এর মধ্যে গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত ১০৪ জন। তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারিদের মধ্যে ৯১২ জনের বাড়ি টেকনাফে। তাঁদের মধ্যে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের সদস্যও আছেন।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031