আন্দোলনকারীরা সরকারি চাকরিতে ৩০% কোটা বহালের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে চলমান অবস্থান কর্মসূচি ১২ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করেছেন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের জন্য তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. আ.ক.ম. জামাল উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের কথা চিন্তা করে তারা কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করেছেন। আজ রাত ১২টা থেকে আগামীকাল বেলা ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। তবে রাত ১২টা পর্যন্ত তারা শাহবাগেই অবস্থান করবেন বলে জানান।

বুধবার থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে শুক্রবার বিকালে শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয় কয়েকশ আন্দোলনকারী। তারা বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে তুলে শাহবাগ চত্বর। সেখানে জড়ো হতে থাকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার বিকাল তিনটার পর থেকে তারা এ অবরোধ শুরু করে।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের পর মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের দাবিতে বুধবার বিকালে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। টানা অবস্থান চালিয়ে গিয়ে বৃহস্পতিবার তারা কর্মসূচি শিথিলের ঘোষণা দেয় নয় ঘণ্টার জন্য। শুক্রবার মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ভোর ছয়টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যযন্ত শাহবাগ মোড় খোলা রাখার কথা জানায় আন্দোলনকারীরা।

আর এই সময় শেষ হওয়ার পর তিনটার দিকেই আবার শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের পাশাপাশি এই কর্মসূচিতে যোগ দেয় প্রতিবন্ধীরাও। সময় গড়ানোর সাথে সাথে আন্দোলনকারীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. আ. ক. ম. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমার্বতনের জন্য আন্দোলন শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।’ শনিবার দুপুর তিনটায় শাহবাগে জড়ো হয়ে তারা সমাবেশ করবেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশসহ নিয়োগের ক্ষেত্রে কোট রাখা হয় মোট ৮০ শতাংশ। পরে তা ধীরে ধীরে কমিয়ে এনে ৫৬ শতাংশ করা হয়। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশে হাত দেয়নি কোনো সরকার। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা তাদের সন্তানদেরকেও দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকেই স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতপন্থীরা নানা সময় আন্দোলনের চেষ্টা করেছে। তবে তারা ব্যর্থ হয়।

তবে গত ফেব্রুয়ারিতে কোটা সব মিলিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। আর নানা ঘটনাপ্রবাহের পর গত বুধবার মন্ত্রিসভা প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা পুরোপুরি তুলে দিয়ে সাধারণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন জারি হয় প্রজ্ঞাপন। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে আগের মতোই কোটা বহাল আছে। আর কোটা নিয়ে আন্দোলনকারীরা এসব চাকরিতেও কোটা রাখার সমালোচনা করছে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031