নগরবাসী ঈদুল আজহায় স্বজনদের সঙ্গে কোরবানি দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার জন্য চাই যাওয়ার বন্দোবস্ত। বাস বা ট্রেনের টিকিট। এরই মধ্যে গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি। গতকাল ছিল ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির তৃতীয় দিন। আগামী ১৯শে আগস্টের টিকিটের জন্য এদিন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ছিল হাজার হাজার মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
তাদের একজন চট্টগ্রামের জিয়া উদ্দিন খোকন। মতিঝিলে কম্পিউটার মেরামতের দোকান তার। পরিবার নিয়ে থাকেন যাত্রাবাড়ীর কাজলায়। বৃদ্ধা মা বাসে চড়তে অস্বস্তিবোধ করেন। তাই সপরিবারে বাড়ি যাওয়ার জন্য চাই ট্রেনের ৪টা টিকিট। তা সংগ্রহ করতে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে হাজির তিনি। পরদিন শুক্রবার টিকিট কাটার অপেক্ষায় থাকেন। তিনি বলেন, আমি বৃহস্পতিবার বিকালে এসেছি। এসে দেখি আমার আগে লাইনে আরো ৬৩ জন অপেক্ষায় রয়েছেন। পত্রিকা বিছিয়ে বসে থেকে লাইনে সিরিয়াল দিই। সন্ধ্যা হতে লাইন আরো দীর্ঘ হয়। তবে শুক্রবার ভোর থেকে বেশি মানুষ আসে। ৭টা নাগাদ লাইন স্টেশনের বাইরে ছাড়িয়ে যায়। আমি সকাল সকাল সাড়ে ন’টার দিকে টিকিট পাই। টিকিট পাওয়ার পর সেই কষ্ট ভুলে গেছি। তবে লাইনে দাঁড়ানো সবাই টিকিট পায়নি বলে জানান তিনি।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত বুধবার থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ওই দিন ১৭ই আগস্টের এবং পরদিন ১৮ই আগস্টের টিকেট বিক্রি হয়। শুক্রবার ১৯শে আগস্টের টিকেটের পর আজ শনিবার ২০ ও আগামীকাল রোববার ২১শে আগস্টের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে। একইভাবে আগামী ১৫ই আগস্ট থেকে শুরু হবে আগাম ফিরতি টিকিট বিক্রি। আগামি ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯শে আগস্ট ঈদ পরবর্তী ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮শে আগস্টের ফিরতি টিকিট বিক্রি হবে। এদিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে কালোবাজারে টিকিট বিক্রি প্রতিরোধে র্যাব, পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে। পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, এবার নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে ট্রেনের উপর প্রচণ্ড চাপ যাচ্ছে। এরই মধ্যে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পর রেলস্টেশনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় লেগে আছে। শুক্রবার ৬৮টি ট্রেনের ২৬ হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হবে বলে জানান তিনি।