আজ সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই প্রশ্ন তোলেন। মন্ত্রিসভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একজন প্রতিমন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় উঠে আসে ড. কামাল প্রসঙ্গ। এ সময় প্রধানমন্ত্রী অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে নিজ দলের সাবেক এই নেতার সমালোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই আইনটি তো তিনিই ভারত থেকে নিয়ে এসেছেন। এখন তিনি আবার এই আইনের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তার তো এ ব্যাপারে কথা বলার নৈতিক অধিকার নেই।”
প্রধানমন্ত্রীর কথার সূত্র ধরে একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীও ড. কামালের সমালোচনা করেন। আওয়ামী লীগের প্রবীণ ওই নেতা বলেন, “তিনি বহু দিন ধরে সরকারের সমালোচনা করছেন। তার কোনো স্থিরতা নেই। কখন কী বলেন নিজেও জানেন না।”
এ সময় আইনমন্ত্রী অ্যাভোকেট আনিসুল হক বলেন, “এর আগে ড. কামাল হোসেন এই ধরনের আইনের পক্ষে মত দিয়েছিলেন। আমার কাছে এর প্রমাণ আছে। তিনি (ড. কামাল) ভারতের উদাহরণ টেনে বলেছিলেন, ভারতের মতো এ ধরনের আইন আমরাও করতে পারি।”
গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (তদন্ত ও প্রমাণ) আইন ২০১৬ খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইনটি পাস হলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা পাবে জাতীয় সংসদ।
এই আইন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এক অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন বলেন, “মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদকে দেয়ার বিধান কার্যকর হলে দেশের বিচার বিভাগ ও সংবিধানের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। এক মিনিটেই ক্যাবিনেটে আইন পাস করলে হবে না। এটি যদি জনমত উপেক্ষা করে করা হয়, তবে তার ফল ভালো হবে না।’
ড. কামাল হোসেন ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান রচনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে আইনমন্ত্রী এবং ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের পর দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হলে ড. কামাল হোসেন দল ছাড়েন। পরে গণফোরাম নামে নতুন দল গঠন করেন এই স্বনামখ্যাত আইনজীবী।