কাঁচমরিচের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন সবজিতে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১৫ টাকা। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে । খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা ছাড়িয়েছে সবুজ লঙ্কা। উজিয়েছে মাছের বাজারও।

শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচাবাজার, টাউন হল বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

দামের এই ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে খুচরা ব্যবসায়ীদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি বিভিন্ন বাজারের মাছ ও সবজি বিক্রেতাদের। তারা বলছেন, তারা যেমন কিনে আনেন তেমন বেচেন।

ঈদের পর পর অর্থাৎ দিন ১৫ আগেও কাঁচামরিচের দাম ছিল ৬০-৭০ টাকা। গত সপ্তাহে দ্বিগুণ বেড়ে ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর এখন প্রতি কেজি কাঁচামরিচ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। কোথাও কোথাও বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা পর্যন্ত।

কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা রিয়াজুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দাম বাড়লে আমরা কী করুমু। পাইকারি ১৫০ টাকার ওপরে কেনা পড়ে। এ ছাড়া কাঁচামালে অনেক ঘাটতি যায়। কেজিতে ১০-২০ টাকা লাভ না করলে আমরা চলব কেমনে।’

একই বাজারের বিক্রেতা সবুজ বলেন, ‘আপনারা তো সব বাজার ঘোরেন। আমরা দাম বাড়াইলে শুধু এই বাজারে বাড়ত। সব বাজারে তো আমরা দাম বাড়াইতে পারি না। দাম গোড়া (পাইকারি) থেকে বাড়ায়। গোড়ায় দাম বাড়লে খুচরা বাজারে বাড়বই।’

দাম আরও বাড়বে না কমবে জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘রাহিওয়ালারা (মজুদ ব্যবসায়ী) রাখি (মজুদ) করলে দাম বাড়বে। নাইলে কমবে।’

বছরের বিভিন্ন সময় একশ্রেণীর মজুদ ব্যবসায়ী বাজারের চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কমিয়ে দেয় বলে জানান কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী। তাদের (খুচরা ব্যবসায়ী) কিছু করার নেই। তখন বাজার এমনিতেই চড়ে যায়। এখন যে সবজি আর কাঁচামরিচের দাম চড়া, তা ওই সরবরাহে কমতির কারণেই হচ্ছে বলে জানান তারা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে বেশির ভাগ সবজির দাম। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। করলা ৬০-৭০, শসা ৪০-৫০, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কদিন আগে ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হওয়া  পেঁপে ৩০-৪০ টাকা। বরবটি ৬০-৭০ টাকা। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ৩-৫ টাকা বেশি।

লাউশাক, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক, ডাটাশাক আটিপ্রতি দাম বেড়েছে ২-৫ টাকা।

দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে মাছের বাজারেও। ২০০-২৫০ টাকা কেজির রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতলা মাছ। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬৫০ টাকায়।

তবে বিক্রেতাদের দাবি, মাছের দাম স্বাভাবিক আছে। মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা মো. হারুন ঢাকাটাইমসকে বলেন, “মাছে মাছে পার্থক্য আছে। কম দামেও পাইবেন। পুরা তাজা মাছ দাম বেশি। ভালো মাছের দাম একটু বেশি হইলেও গায়ে লাগে না। মাছের দাম বাড়ে নাই। আগের মতোই আছে।’

বিক্রেতার এই দাবির সঙ্গে একমত নিন ক্রেতারা। কিন্তু নিরুপায় তারা। টাউন হলে বাজারে মাছ কিনতে এসেছিলেন জহিরুল ইসলাম। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘এ দেশে দাম কমার নামগন্ধ শুনি না। শুধু বাড়েই। প্রতিদিন যেভাবে দাম বাড়ে, আমাদের আয় তো সেভাবে বাড়ে না। আমরা চলব কীভাবে।’

অন্যান্য মাছেও দেখা গেছে দামের ঊর্ধ্বগতি। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকা কেজি দরে। চিংড়ি ৪৫০-৫৫০ টাকা, বোয়াল ৪০০-৪৫০, শিং ৪০০-৫০০, পুঁটি ১৬০-১৮০, মলা ৩০০-৩৫০, পাবদা ৪০০-৪৫০, দেশি মাগুর ৪০০-৫০০, পাঙ্গাস ১২০-১৫০, কৈ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে আজ।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031