বিশ্বব্যাংক প্রাথমিক শিক্ষা ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর দুই প্রকল্পে ৭১ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে । এর মধ্যে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রকল্পে ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর গুণগত মান উন্নয়নে ১২০ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ-সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডির সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিও ফান ঋণ চুক্তিতে সই করেন।

অনুষ্ঠানে পিইডিপি-৪ প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আসিফ উজ জামান।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কারিকুলাম উন্নয়ন, পাঠ্যপুস্তক ও টিচিং-লার্নিং উপকরণ সরবরাহ, শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষকের জন্য শিক্ষা, চলমান পেশাগত উন্নয়ন, প্রাথমিক শিক্ষায় আইসিটির ব্যবহার, পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, চাহিদাভিত্তিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কার, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা, বিশেষ ও প্রতিবন্ধী শিশুর শিক্ষা, ইমারজেন্সি এডুকেশন, যোগাযোগ ও সামাজিক সংহতি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিকেন্দ্রীকরণ, গুণগত বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহি, বাজেট শক্তিশালীকরণ এবং ক্রয় অর্থ ব্যবস্থাপনায় এই অর্থ ব্যয় হবে।

অনুষ্ঠানে ইআরডি সচিব বলেন, দুটি প্রকল্পই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সব শিশুর জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি সেই লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে। যেটি সময়মতো ও মানসম্মত পরিসংখ্যান নীতি নির্ধারণে সহায়ক হবে। সেই হিসাবে বিবিএসের গুণগত মান উন্নয়নে প্রকল্পটি জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিও ফান বলেন, মানসম্পন্ন শিক্ষা উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের সংখ্যা সমানুপাত অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে।

বিশ্বব্যাংক ১৯৯৮ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে উল্লেখ করে চিমিও ফান বলেন, ‘এই সহায়তা সব শিশুর প্রাইমারি স্কুলে ভর্তির লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয়েছে। উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার যে ভিশন বাংলাদেশের রয়েছে, প্রাইমারি শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে নজর দেওয়ার মাধ্যমে তা দৃশ্যমান হবে।

অন্য প্রকল্পের আওতায় সঠিক, নির্ভরযোগ্য, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পরিসংখ্যান প্রণয়নের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এর জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিচালিত প্রধান জরিপসহ অন্যান্য পরিসংখ্যানগত কার্যক্রমের পরিচালনা পদ্ধতি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে সেগুলো যুগোপযোগী করা, দ্রুততম সময়ে তথ্য সংগ্রহ করা, সংকলন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে যথাসময়ে রিপোর্ট প্রকাশ পর্যন্ত একটি সামিগ্রক আইসিটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। এর জন্য দক্ষ জনবল তৈরিতে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বিবিএসের মহাপরিচালক মো. আমীর হোসেন এবং পরিসংখ্যান ব্যুরোর এনএসডিএস প্রকল্পের পরিচালক দিলদার হোসেন প্রমুখ।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031