দুই দর্শনার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রলীগ নেতাসহ তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ।
শুক্রবার বিকাল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনের রাস্তায় ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে দর্শনার্থী রুবেল বড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী হলেন- দর্শন বিভাগের ৪৩ তম আবর্তনের আশরাফুল ইসলাম দ্বীপ, রসায়ন বিভাগের ৪৩ তম আবর্তনের মাজিদুল হাসান রবিন এবং ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫ তম আবর্তনের মোহাম্মদ রায়হান পাটোয়ারী। এদের মধ্যে মাজিদুল হাসান রবিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সম্পাদক এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানার অনুসারী।
ছিনতাইয়ের ঘটনায় জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে ছাত্রলীগ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।
অভিযোগকারী রুবেল বড়–য়া বলেন, বিকাল চারটার দিকে বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে কালভার্ট সংলগ্ন স্থানে মটরসাইকেল স্টার্ট করছিলাম। তখন কয়েকজন ছেলে এসে আমাদের সাথে কথা কাটাকাটি করার একপর্যায়ে ছুরি দেখিয়ে টাকা নেওয়ার জন্য ধস্তাধস্তি করে এবং টাকা ছিনিয়ে নেয়। তখনি এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে হাজির হন এবং আমার কাছ থেকে যে টাকা কেড়ে নিয়েছিলো তা উদ্ধার করে নিজ হেফাজতে রেখে সিকিউরিটি অফিসে নিয়ে আসেন। তখন কথাবার্তার মাধ্যমে অভিযুক্তদের নাম জানতে পারি। এ সময় অভিযুক্তরা সিকিউরিটি অফিসে আসে এবং আমাদের হুমকি-ধামকি দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছিনতাইয়ের সময় রবিন, দ্বীপ এবং রায়হান ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
নিরাপত্তা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনের রাস্তায় বহিরাগত দুই দর্শনার্থীর সাথে টানা হেঁচড়ার সময় নিরাপত্তা কর্মীরা উপস্থিত হলে অভিযুক্তরা বহিরাগতদের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ করে। এ সময় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা অভিযুক্তদের কাছ থেকে অভিযোগকারীর টাকা উদ্ধার করে নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত রবিন ছিনতাইয়ের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনার সময় সেখানে ছিলাম না। জুনিয়রের ফোন পেয়ে পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে যাই।
আর দ্বীপের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত তিনজন দর্শনার্থীদের কাছ থেকে “সেখানে ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি বা তাদের কোন কিছু কেউ নেয়নি” মর্মে একটি অডিও রেকর্ড করে।
রেকর্ডিংয়ের বিষয়ে অভিযোগকারী রুবেল বড়ুয়া বলেন, নিরাপত্তা অফিসে ছাত্ররা আমাদের সাথে ধমকের সুরে কথা বলতে থাকে। এতে আমরা ঘাবড়ে যাই। আমরা আর ঝামেলা বাড়াতে চাচ্ছিলাম না। তাই ভয়ে আমরা সবকিছু অস্বীকার করি।
এর আগে অভিযুক্ত তিনজনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া রায়হানের নামে নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে মারধরেরও অভিযোগ রয়েছে।