ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরাম (ইআরএফ) অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের পেশাগত মান উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালাসহ নানামুখি কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে নিজস্ব কার্যালয় ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু করেছে ।
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
ইআরএফের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব শামসুল আলম, ইন্স্যুরেন্সে ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এস কে সুর, ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাস উদ্দিন আহমেদ, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিআইয়ের সহ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফসহ ইআরএফের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, দশ বছর বয়সে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে আমার পরিচয়। তখন থেকেই এ পেশার চ্যালেঞ্জ দেখেছি। ১৯৮২ সালে প্রথম মন্ত্রী হওয়ার পর অর্থনীতির বিষয় মানুষের মধ্যে আগ্রহ দেখিনি। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার মন্ত্রী হওয়ার পর অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদেও সঙ্গে পরিচয় হয়। বর্তমানে বাজেট প্রণয়নেও সাংবাদিকরা প্রাক বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নিজস্ব কার্যালয় ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মাধ্যমে নতুন ভিত্তি স্থাপনের পাশাপাশি পেশাগত মান বাড়িয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, আগামী তিন বছর পর দেশের ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নেও ইআরএফ সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ফজলে কবির বলেন, অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকরা আর্থিক খাতের কঠিন বিষয়গুলো মানুষের কাছে সহজভাবে উপস্থাপন করছে। সরকারের নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে এ সাংবাদিকরা ভূমিকা রাখছে। ২০২৪ সালে রফতানিমুখি অর্থনীতির ভিত্তি তৈরি হবে। সাংবাদিকরা এ সময়ের আগেই তাদের দক্ষতা আরো বাড়িযে এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। প্রতিষ্ঠার পর বর্তমান অবস্থানে আসতে ইআরএফকে ২৫ বছর অপেক্ষা করতে হলেও আগামী আড়াই বছরে দ্বিগুণ সাফল্য অর্জন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নতুন কার্যালয় স্থাপন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে ইআরএফ সদস্যদের জন্য সামগ্রিক অর্থনীতি ও বাজেট কাঠামো নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সচিক শামসুল আলম।
ফরাস উদ্দিন বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ গড়ে তুলতে একটি নির্দিষ্ট পরিচয় দরকার হয়। ইআরএফ অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের এমন একটি ভিত্তি দিয়েছে। সাংবাদিকদের দক্ষ করে তুলতে আর্থিক খাতের মূল বিষয় নিয়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন করতে হবে। ইআরএফ আর্থিক খাতের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকদের কাজ নিয়ে একটি তথ্যভান্ডার গড়ে তুলবে বলে আশা করেন তিনি।
এর আগে স্বাগত বক্তব্যে ইআরএফ সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল বলেন, আগামীতে বিশ^ অর্থনীতিতে মযার্দাশীল আসনে থাকবে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এগিয়ে নিতে সঙ্গে থাকবে ইআরএফ। অর্থনীতির সাংবাদিকদের তাদের বেসিক জায়গায়টাকে শক্তিশালী করতে ইআরএফ কাজ করবে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির জন্য অন্যের কাছে না ঘুরে নিজেদের কার্যালয়কেই ব্যবহার করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দুই যুগ পার করতে যাচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইআরএফ। রিপোর্টারদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে ১৯৯৪ সালে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। সদস্যদের দক্ষতা বাড়াতে রিপোর্টারদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ফেলোশীপ প্রধান এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা রির্পোটিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে ইআরএফ। এছাড়াও জাতীয় বাজেট প্রণয়ন, মুদ্রানীতি ঘোষণাসহ দেশের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে থাকে সংগঠনটি। আর প্রতিষ্ঠার ২৪ বছর নিজস্ব কার্যালয় উদ্ধোধন করতে যাচ্ছে।