পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আরও দুইজন নিহত হয়েছে কুমিল্লায় , পুলিশের দাবি অনুযায়ী নিহতরা মাদক কারবারি। তারা হলেন বাবুল প্রকাশ লম্বা বাবুল (৩৫) এবং রাজিব (২৬)।
বুধবার দিবাগত রাতের পৃথক সময়ে সদর দক্ষিণ উপজেলা ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলাধীন আমানগন্ডা সলাকান্দা নতুন রাস্তার মাথায় এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে গত তিন দিনে কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মোট পাঁচজন নিহত হলেন।
এর আগে গত সোমবার দিবাগত রাতে গোয়েন্দা (ডিবি) ও থানা পুলিশের সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে শরীফ ও পিয়ার নামে দুই মাদক চোরাকারবারি নিহত হয়েছিলেন।
এছাড়া মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আদর্শ সদর উপজেলার টিক্কার চর ব্রিজ সংলগ্ন গোমতী বাঁধ এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে নুরুল ইসলাম ইছা নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন।
গতরাতে নিহত বাবুল চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বৈদ্দেরখিল গ্রামের হাফেজ আহাম্মদের ছেলে এবং রাজিব সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ি সংলগ্ন চাঙ্গিনী গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। উভয়ই তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি বলে পুলিশ দাবি করেছে। উভয় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও মাদক।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল ফয়সাল জানান, মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌর এলাকার রামরায় এলাকা থেকে তালিকাভুক্ত মাদক চোরাকারবারি বাবুলকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার একটি মাদকের চালান উপজেলার আমানগন্ডা এলাকায় রয়েছে। পরে বাবুলকে নিয়ে রাত একটার দিকে আমানগন্ডার নতুন রাস্তার মাথার মন্তাজের বাগানে গেলে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ২৩ রাউন্ড গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গুলিবিনিময়ে মাদক চোরাকারবারি বাবুল ছাড়াও থানার এসআই মোজাহের, কনস্টেবল মিজান ও ফরিদ আহত হয়।
বাবুলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি এবং ২০০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত বাবুলের বিরুদ্ধে মাদক আইনে পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে ওসি ফয়সাল জানান।
অপরদিকে সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম জানান, রাত সোয়া দুইটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পুরাতন ট্যাংক রোডের গোয়ালমথন এলাকায়
অভিযান চালানো হয়। এ সময় মাদক কারবারিরা একটি প্রাইভেটকারে মাদকদ্রব্য নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারি রাজিব ও তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা ১৭ রাউন্ড গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন মাদক কারবারি রাজিব। পরে রাজিবকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রাজিবের বিরুদ্ধে থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।
বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে কার্তুজসহ একটি এলজি, ৫০ বোতল ফেন্সিডিল এবং ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।