পুলিশ দেশের দুই জেলায় তিন মাদক বিক্রেতার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে । বুধবার দিবাগত রাতে মাগুরা জেলায় দুইজন এবং বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরায় একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি। মাগুরা থেকে যে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন বলে দাবি করছে পুলিশ।
নিহত তিনজনই মাদক চোরাকারবারে জড়িত। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।
গত ৩ মে ঢাকায় র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মতো মাদকের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থান নিতে বাহিনীটিকে নির্দেশ দেন। মূলত এরপর থেকে মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান জোরদার হয়। র্যাবের পাশাপাশি পুলিশ ও ডিবি পুলিশও অভিযানে নামে। ৪ মে থেকে চলা মাদকবিরোধী অভিযানে গতকাল পর্যন্ত ৪৩ জন মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন।
প্রতিটি বন্দুকযুদ্ধের কাহিনি ছিল একই রকম। ‘মাদকের কারবারি’কে নিয়ে অভিযানে বের হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি করে তাদের সহযোগীরা। আর গোলাগুলির এক পর্যায়ে নিহত হন সন্দেহভাজন মাদকের কারবারি। কখনও কখনও পুলিশের এক-দুই জন সদস্য আহতও হন। তবে সাতক্ষীরা ও মাগুরা থেকে যে তিন মাদক বিক্রেতার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়নি বলে দাবি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি। ঢাকাটাইমসের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।
মাগুরা
মাগুরায় পারনান্দুয়ালী হাউজিং প্রজেক্ট এলাকায় রাতে আয়ুব হোসেন ও মিজানুর রহমান কালু নামে দুই মাদক বিক্রেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মাগুরার সহকারী পুলিশ সুপার ছনরুদ্দিন আহমেদ জানান, মধ্যরাতে পারনান্দুয়ালী হাউজিং প্রজেক্ট এলাকায় দুই দল মাদক চোরাকারবারির মধ্যে গোলাগুলি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে চোরাকারবারিরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে দুইজনকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ। এছাড়া সেখানে ৫০০ গ্রাম হেরোইন ও ছয়টি গুলির খোসা পাওয়া যায়।
নিহতদের মধ্যে আইয়ুব হোসেন শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামের জব্বার শেখের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ ২১টি মামলা আছে। আর মিজানুর রহমান কালুর শহরের ভায়না টিটিডিসি পাড়ায় আবদুল বারিক মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ ১৮টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মরদেহ দুটি মাগুরা সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
সাতক্ষীরা
বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামের সিদ্ধেরপুকুর এলাকা থেকে একজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নামপরিচয় জানাতে না পারলেও নিহত ব্যক্তি মাদক চোরাকারবারি বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।
মরদেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, পাঁচ রাউণ্ড গুলি ও ৪৮ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ভাড়াশিমলা ইউপি সদস্য পিয়ার আলী জানান, ভোরে চৌবাড়িয়া গ্রামের সিদ্ধেরপুকুর এলাকায় পাকা রাস্তার পাশে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা তাকে খবর দেন। পরে বিষয়টি থানায় জানালে সকাল সাতটার দিকে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান, ওসি (তদন্ত) রাজীব হোসেন ও উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেন।
নিহতের চোয়াল ও গলায় দু’টি গুলি লেগেছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি পিস্তল, পাঁচ রাউণ্ড গুলি, একটি নতুন গামছা ও একটি পলিথিনের বস্তায় থাকা ৪৮ বোতল ফেন্সিডিল।
নিহতের পরনে সাদা রঙের ফুল শার্ট জামা ও একটি চেকের লুঙ্গি ছিল। তার বয়স ৪৮ থেকে ৫০ এর মধ্যে হবে।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান জানান, নিহতের নামপরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। নিহত ব্যক্তি মাদক কারবারি বলে ধারণা করা হচ্ছে।