সাড়ে ২০ হাজার কোটি টাকা টানা ১৩ কার্যদিবস দরপতনে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে । এ সময়ে ডিএসইর প্রধান সূচকের পতন হয়েছে ৪২৩ পয়েন্টের বেশি। অবশ্য গতকাল ঘুরে দাঁড়িয়ে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ২২ পয়েন্ট। দৈনিক গড় লেনদেন ৫০০ কোটি থেকে এখন ৩০০ কোটির ঘরে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ডিএসই কৌশলগত বিনিয়োগকারী নিয়ে চীন ও ভারতের টানাটানিকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা সংকট তৈরি হয়ে ছিল।
এদিকে সূচকও কমেছে ব্যাপক হারে। গত ২৬শে এপ্রিল ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৮১৩ পয়েন্ট। ১৩ দিনে সূচক ৪২৩ পয়েন্ট বা ৭.৩০ শতাংশ কমে নেমে এসেছে ৫ হাজার ৩৯০ পয়েন্টে। গত এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে সূচক সবচেয়ে কম ছিল ২০১৭ সালের ৩০শে মে, ৫ হাজার ৩৭৩ পয়েন্ট। একই চিত্র চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ব্যাংকগুলোতে সুদের হার অনেক বেড়ে গেছে। মানুষ পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলে বেশি লাভের জন্য ব্যাংকে রাখছে। সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করেছে বলে মনে করেন লালী। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেছে, আস্থাহীনতা আর শঙ্কায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছে। দেশের পুঁজিবাজারে ব্যক্তি বিনিয়োগকারী বেশি হওয়ায় একটানা দরপতন কিংবা গুজবে শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে। ফলে সার্বিক বাজারে প্রভাব পড়ে বলে জানান তারা। এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক গত কার্যদিবসের চেয়ে বেড়ে শেষ হয়েছে গতকালের কার্যক্রম। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ২২.৫৮ পয়েন্ট বেড়েছে। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে মোট লেনদেন হয়েছে ৫৬১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। রোববার লেনদেন হয়েছিল ৩৯৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সুতরাং এক কার্যদিবসের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৬৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
এদিন ডিএসইতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২২.৫৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪১৩ পয়েন্টে, ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ২.৯৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২৬৮ পয়েন্টে এবং ১.৯২ পয়েন্ট কমে ডিএসই-৩০ সূচক দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৭ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯৯টির, কমেছে ৯৪টির এবং কোনো পরিবর্তন হয়নি ৪০টি কোম্পানির শেয়ার দর। এছাড়া টাকার অঙ্কে এদিন ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো- ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড, গ্রামীণফোন, বেক্সিমকো, ব্র্যাক ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, মনো সিরামিক, লিগ্যাসি ফুটওয়ার লিমিটেড, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং লিমিটেড, অ্যাডভান্ট ফার্মা এবং ইভিন্স টেক্সটাইলস লিমিটেড।