সংযমের মাস রোজার মাসেও থেমে নেই মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় মাস,  গাজীপুরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলের অবৈধ যৌন ব্যবসা। নগরের চান্দনা চৌরাস্তা, তেলিপাড়া, কোনাবাড়ি, টঙ্গী, হোতাপাড়া, মাওনা চৌরাস্তা, এমনকি ভাওয়ালের বনে গড়ে প্রায় অর্ধশত আবাসিক হোটেলে চলছে জমজমাট এ ব্যবসা। এমনকি একটি আবাসিক হোটেলের ড্রামের ভেতর থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধারের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি হোটেলও ঈদ সামনে রেখে রোজার আগেই আবার চালু করা হয়েছে। অবাধ যৌন ব্যবসার পাশাপাশি অনেক স্থানেই লেনদেন হয় মাদকদ্রব্য। এলাকাবাসীর অনুরোধে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দ্বিতীয় রোজার দিনে এ ধরনের চারটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে যৌনকর্মীসহ খদ্দের ও সংশ্লিষ্টদের আটক করা হয়েছে। হোটেলগুলোকে সিলগালা করা হয়েছে।

আবার অনেককে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাৎক্ষণিক জেলও দেয়া হয়েছে। যৌন ব্যবসায় জড়িত, এসব হোটেলে এর আগেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে খদ্দেরসহ যৌনকর্মীদের আটক করে সাজাও দেয়া হয়েছে। হোটেলগুলোকে সিলগালা করে দেয়ার কিছুদিন পর রহস্যজনক কারণে আবারো সেগুলো জমজমাট হয়ে ওঠেছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসনের এনডিসি বিএম কুদরত-এ-খুদা জানান, জেলার সাধারণ মানুষ, স্থানীয় ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদসহ সর্বস্তরের নাগরিকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের নির্দেশে গত শনিবার দ্বিতীয় রোজার দিনে জেলার চান্দনা চৌরাস্তা, তেলিপাড়া ও রাজেন্দ্রপুর এলাকার রোজ ভ্যালি, বন্ধু বোর্ডিং, বৈশাখী এবং বিলাস নামের চারটি আবাসিক হোটেলে দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন এনডিসি বিএম কুদরত-এ-খুদা এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আহমেদ। তিনি  আরো জানান,
এসব হোটেলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অবাধ যৌনাচার বিপণনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযানে আটককৃতদের অশ্লীল ও আপত্তিকর অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকায় বেশ কয়েকজনকে আটক এবং বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। হোটেলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এসব নামমাত্র আবাসিক হোটেলগুলো মাদকের অবাধ বিস্তার, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন সামাজিক অস্থিরতার অন্যতম উৎস হিসেবে পরিচিত। ব্যাটালিয়ন আনসার, স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সর্বস্তরের জনতা এই অভিযানে সক্রিয় সহায়তা প্রদান করেন এবং এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখারও জোর দাবি জানান।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় এবং অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের আহ্বান এবং রোজার আগেই বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের মিছিল-মিটিং-এর পরও অবৈধ এ যৌন ব্যবসায়ী চক্র কোনোভাবে থেমে থাকেনি। বরং ঈদ সামনে রেখে তাদের হোটেল নামের মিনি পতিতালয়গুলোকে আরো সাজিয়ে-গুছিয়ে তোলা হচ্ছে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031