অকটেন ও পেট্রলের দাম লিটার প্রতি ১০ টাকা এবং ডিজেলের দাম লিটার প্রতি তিন টাকা করে কমিয়েছে সরকার। বাস-ট্রাকসহ বেশিরভাগ গণপরিবহণ চলে ডিজেলে। আর যে এলাকায় রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস নেই, সেসব এলাকায় পেট্রল বা অকটেনে অটোরিকশা চলে।
জ্বালানির দাম পুনর্নির্ধারণের পর পরিবহণ ভাড়াও কমানোর দাবি উঠেছে। সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর আগে জ্বালানি তেলের দাম কমলে বাস ভাড়াও কমবে জানালেও সরকার এখন এ বিষয়ে কিছুই বলছে না। পুরোপুরি চুপ ভাড়া নির্ধারণের দায়িত্বে থাকা বিআরটিএর বিশেষ কমিটি। আর পরিবহণ মালিকপক্ষ পারলে গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছে। যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তারা কেউ ফোন ধরছেন না, এসএমএস দিলে তার জবাবও পাওয়া যাচ্ছে না।
এর আগে যখন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল তখন পরিবহণ কোম্পানিগুলো অবশ্য সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করেনি। তেলের দাম বাড়ানোর পর পর নিজেদের খেয়াল খুশি মতো ভাড়া বাড়িয়েছে তারা। অথচ এবার ভাড়া কমার কোনও লক্ষণই নেই।
সরকার যখন তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল তখন পরিবহণ মালিকরা ভাড়া কমানোর ক্ষেত্রে নানা অযুহাতের কথা বলে আসছিলেন। তাদের দাবি, তেলের দাম কমাই ভাড়া কমানোর ক্ষেত্রে একমাত্র অনুঘটক নয়। তাদের যুক্তি, তেলের দাম কমলেও যন্ত্রাংশের দাম বেড়েছে, বেড়েছে শ্রমিকের মজুরিও। এসব যুক্তি দেখিয়ে ভাড়া না কমানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে মালিক সমিতি।
সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী তেলের দাম এক টাকা বাড়লে বা কমলে বাস ভাড়াও কিলোমিটার প্রতি এক পয়সা বাড়বে বা কমবে। কিন্তু সবশেষ যখন ২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারি ডিজেলের দাম লিটারে ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছিল তখন বাস ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১০ পয়সা বাড়ানো হয়। অর্থাৎ নীতিমালার প্রায় দ্বিগুণ হারে ভাড়া বাড়ানো হয়। এখন সে হারেই যদি বাস ভাড়া কমানো হয় তার পরও কিলোমিটার প্রতি ৫ পয়সার মতো কমানো সম্ভব।
এদিকে বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, বাস ভাড়া পুর্ননির্ধারণের জন্য বিআরটিএ বাস ভাড়া বিশ্লেষণ কমিটির বৈঠক হবে। এ বৈঠকের সুপারিশ মন্ত্রনালয়ে যাবে তারপর ভাড়া পুর্ননির্ধারণ হবে। এ কমিটি মন্ত্রণালয়, বাস মালিক সংগঠন ও যাত্রীদের পক্ষ থেকে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ- ক্যাবের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে।
ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তেলের দাম কমানোয় আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই। এখন পরিবহণ ভাড়া যেন কমানো হয়, সেটাই চাই আমরা’।
জানতে চাইলে বিআরটিএ পরিচালক (অপারেশন) মুহাম্মদ শওকত আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তেলের দাম কমলে বাস ভাড়া কমানো হবে- এমন ঘোষণা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী মন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন। এখন বাসভাড়া কমানো হবে। বাস ভাড়া পুনর্নির্ধারণ কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হবে’।
তবে বাস ভাড়া এই পুনর্নির্ধারণ কমিটির বৈঠক কবে বসবে, কবে থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হবে, সে বিষয়ে বিআরটিএর পরিচালক কিছু জানাতে পারেননি।
তবে বিআরটিএ যদি ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্তও নেয়, তাহলে তা রাজধানীতে কার্যকর নাও হতে পারে। কারণ, মহানগরে প্রায় সব বাসই চলে সিএনজিতে। ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত হলে তা কার্যকর হতে পারে কেবল দূরপাল্লার তেলচালিত বাসে। – See more at: