দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর অনির্দিষ্টকালের আন্দোলনের মুখে অচল হয়ে পড়েছে । আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারী ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর সাথে কয়লা খনির কর্মকর্তাদের সংঘর্ষে ইতোমধ্যে উভয় পক্ষের আহত হয়েছে ৩০জন। কর্মকর্তাদের অভিযোগ, তাদের পরিবার-পরিজনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারী ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী। অন্যদিকে আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারী ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী বলছেন,তাদের ন্যায্যদাবী আদায়ের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী প- করতে তাদের উপর হামলা ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে।এনিয়ে এলাকায় বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসন মোতায়েন করেছে অতিরিক্ত পুলিশ।
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে শ্রমিক-কর্মচারী ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর লাগাতার আন্দোলনের ৬ষ্ট দিন আজ শুক্রবার অতিবাহিত হচ্ছে। আন্দোলনের মুখে খনিতে কর্মরত দেশী-বিদেশী কমকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারসহ প্রায় ৩’শ নাগরিক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

অবরোধকারীরা খনি এলাকার ভেতরে কোন প্রকার খাদ্য, ঔষধ, পথ্য প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। কেউ বাইরে যেতে চাইলেই শ্রমিকরা হামলা চালায়। গত ১৩ই মে রোববার সকাল থেকে দিনাজপুর বড়পুকুরিয়ার কয়লা খনির শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে মূল গেটের সামনে অবস্থান নেয়। সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটিতে কাজ করলে প্রাপ্য মুজুরি প্রদান, কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে একই সার্কুলারে কর্মচারী নিয়োগসহ আউট সোর্সিং শ্রমিকদের স্থায়ী নিয়োগ, প্রফিট ও অন্যান্য বোনাসসহ বৈশাখী ভাতা প্রদান, নিয়মানুযায়ী অভার টাইমের টাকা প্রদান, সকল আন্ডার গ্রাউন্ড শ্রমিকদের ৬ঘন্টা ডিউটিসহ ১৩ দফা দাবি লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রদান করে শ্রমিকরা। দাবীর পাশাপাশি তাদের উপর হামলাকারী কর্মকর্তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন কর্মসূচী থেকে ফিরে আসবে না বলে জানিয়েছেন  বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি।

খনির এক হাজার ৪১ জন শ্রমিক অনির্দিষ্টকালের এই কর্মবিরতি শুরু করায় রোববার (১৩ মে)সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে খনির কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম। পাশাপাশি শ্রমিকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ৬ দফা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে খনিতে কয়লা উত্তোলনের ফলে ২০ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। তারা জানায়, কর্মবিরতির তৃতীয় দিন মঙ্গলবার  কর্মকর্তা ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় তাদের ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
বহিরাগত একটি স্বার্থান্বেশী মহল শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করে নিজেদের ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। শ্রমিকদের এই আন্দোলনকে অযৌক্তিক দাবী করে শ্রমিকদের কাজে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের মহা ব্যবস্থাপক ( প্লানিং) এবিএম কামরুজ্জামান।
কর্মবিরতির তৃতীয় দিনে খনি কর্মকর্তাদের উপর হামলার অভিযোগে পার্বতীপুর থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছেন খনি কর্তৃপক্ষ। খনির ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হোসেন কর্তৃক দায়েরকৃত এই মামলায় আসামী করা হয়েছে ৩০/৩৫ জনকে। পার্বতীপুর থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান এই মামলা দায়েরের কথা নিশ্চিত করেছেন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এমনটাই মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল ও বিশেষজ্ঞরা।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031