দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে ১৯দফা দাবিতে যৌথভাবে আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারি ইউনিয়ন ও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীর সাথে কয়লাখনির কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল পৌণে ৯টায় খনির প্রধান ফটকে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্যসহ খনির ছয় কর্মকর্তা ও আন্দোলনকারি সাতজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
আহত কর্মকর্তারা ও পুলিশ সদস্য হলেন, খনির মহাব্যবস্থাপক (পিএন্ডপি) এবিএম কামরুজ্জামান, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান, ব্যবস্থাপক (পার্সনাল) ছানাউল্লাহ্ হক, সহকারি ব্যবস্থাপক জাহিদুর রহমান, সহকারি ব্যবস্থাপক সাজেউল ইসলাম সাজু, উপ-ব্যবস্থাপক কমল মল্লিক ও বড়পুকুরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ কনস্টেবল শাহানুর আলম শাহী। আহতদের মধ্যে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হলেও আহতদের মধ্যে সহকারি ব্যবস্থাপক সাজেউল ইসলাম সাজু, ব্যবস্থাপক (পার্সনাল) ছানাউল্লাহ্ হক ও উপ-ব্যবস্থাপক কমল মল্লিকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে এবং অন্যদের ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে আন্দোলনকারি আহত শ্রমিকদের কাউকেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেনি। আন্দোলনকারিদের পক্ষ থেকে এনামুল ও রাকিবসহ আহত সাতজনকে পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়ার দাবি করা হলেও অন্যদের নাম পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পরপরই গোটা খনি এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ এড়াতে খনির প্রধান ফটকসহ খনি এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করছে। পরিবার পরিজন নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন খনির আবাসিক এলাকায় বসবাসরত কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা।
আহত খনির ব্যবস্থাপক সৈয়দ ইমাম হাসান বলেন, সকাল পৌণে নয়টায় তিনিসহ অন্তত দশজন কর্মকর্তা খনির প্রধান ফটক দিয়ে অফিসে যাওয়া সময় খনি গেটে আন্দোলনকারি শ্রমিকর ও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীর ব্যানারে আন্দোলনকারিরা বাঁধাসহ মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়। এ সময় তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে খনির মহাব্যবস্থাপক এবিএম কামরুজ্জামানসহ অন্য কর্মকর্তারা আন্দোলনকারিদের সাথে কথা বলতে আসলে স্থানীয় মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলনকারিরা লাঠিসোটা নিয়ে আকস্মিকভাবে কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে। এতে অন্তত ১৫ থেকে ২০জন কর্মকর্তা ও কর্মচারি আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর।
আন্দোলনকারি কয়লাখনি শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান ও ক্ষতিগ্রস্ত ২০গ্রামের সমন্বয় কমিটির আহবায়ক মশিউর রহমান বুলবুল বলেন, খনির প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনকালে খনির কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা লাঠি-শোটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে এনামুল হক ও রাকিবসহ সাতজন আহত হয়েছে।
ফুলবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছে। আশা করা যায় একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. হাবিব উদ্দিন বলেন, কর্মকর্তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। #
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |