ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীরা সম্মেলন ঘিরে ‘ব্লেইম’ আতঙ্কে । প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী যাতে নেতৃত্বে আসতে না পারে সেজন্য অভিনব এই পন্থার আশ্রয় নিচ্ছেন ছাত্রলীগেরই একটি পক্ষ। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদেরকে শিবির-ছাত্রদল বানিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। পরবর্তীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বললে মিলছে না সত্যতা। গত ২৯শে এপ্রিল ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ১১-১২ই মে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলন।
বিশ্বদ্যালয় সম্মেলনের কিছুদিন পূর্ব থেকেই পদ প্রত্যাশীদের নামে ব্লেইম গেম শুরু হয়। ছাত্রলীগ দাবি করছে, সংগঠনকে বির্তকিত করার জন্য শিবির-ছাত্রদল এমন অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনের আগের দিন বিশ^বিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হল শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুষার শিবির করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগে বলা হয়, তুষার কলেজে পড়ার সময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ নাকচ করে দেন তুষার। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেই রাজনীতি করেছি। চট্টগ্রাম কলেজে থাকা অবস্থায় কলেজ ছাত্রলীগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এবং তাদের সঙ্গে নানা কর্মসূচিতেও অংশ নিয়েছি। তৎকালীন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও বর্তমানে মহানগর ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আবু মোহাম্মদ আরিফ এবং যারা বর্তমানে কলেজে ছাত্রলীগ করে সবাই আমাকে চিনে। আমার সর্ম্পকে জানে। আমি তাদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করি। এ বিষয়ে আবু মোহাম্মদ আরিফ বলেন, কিছু পেপার কাটিং দিয়ে তুষারকে শিবির বানানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এগুলো নোংরা রাজনীতির অংশ। শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছবি দিয়ে ম্যাগাজিন বের করতো। এ সর্ম্পকে শিক্ষার্থীরা জানেই না। এটা শিবিরের অপরাজনীতির কৌশল। ছাত্রলীগকে বির্তকিত করার জন্য তারা এটি করছে। এদিকে সর্বশেষ অভিযোগ ওঠে বিশ^বিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইউসুফ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে। একটি পক্ষ তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর নকল করে একটি প্রত্যয়ন পত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ইউসুফের গ্রামের বাড়ি শাহজাহানপুর ইউনিয়ন। উপজেলা মাধবপুর ও জেলা হবিগঞ্জ। প্রত্যয়নপত্রে ইউসুফকে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এবং তার পরিবার বিএনপি-রাজাকার পরিবার বলে অবহিত করা হয়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউসুফ। তিনি বলেন, এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের আগে যারা ছাত্রলীগের ক্রান্তিকালে ছিলো তাদের মধ্যে আমি একজন। তখন হল ছাত্রলীগে অধিকাংশই পদ নিতে অস্বীকৃতি জানালেও আমি পদ নেই। পরবর্তীতে হল শাখার সভাপতি হই। এতো দিন তো কোনো অভিযোগ ওঠেনি। তাহলে সম্মেলনের আগ দিয়ে কেন স্বাক্ষর নকল করে প্রত্যয়ন পত্র প্রচার করা হচ্ছে। যারা প্রচার করছে তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। এদিকে প্রত্যয়নপত্রের বিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. লিয়াকত আলী মজনু বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। কে বা কারা আমার স্বাক্ষর নকল করে এটা দিয়েছে। এধরনের কোনো প্রত্যয়ন পত্রে আমি স্বাক্ষর করিনি। তিনি আরো বলেন, ইউসুফের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবার। তার বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। ছাত্রলীগকে বির্তকিত করার জন্য শিবির-ছাত্রদল এমন কাজ করছে।