pm kদেশের মানুষের তেমন আগ্রহ না থাকলেও ৩০ এপ্রিল বাফুফে (বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন) নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের ফুটবল অঙ্গণ দারুণ সরগরম। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সম্মিলিত পরিষদ ও সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটনের ‘ফুটবল বাঁচাও’ জোটের মধ্যে।

গত দুই মেয়াদে বাফুফের সভাপতি ছিলেন দেশের কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন। এবং দু’বারই প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন ছিল তার প্রতি। যে কারণে অতি সহজে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পেরেছিলেন সালাউদ্দিন ও তার প্যানেল। গত নির্বাচনে তার বিপক্ষে তো কোনও প্যানেলই ছিল না।

তবে, এবারের রাস্তা অতটা কুসুমাস্তীর্ণ নাও হতে পারে সালাউদ্দিনের জন্য। যদিও বৃহস্পতিবার জেলা ও বিভাগীয় সংগঠক ফোরামের সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাসির মতিঝিলস্থ বাফুফে ভবনে এসে সালাউদ্দিন প্যানেলকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে গেছেন। এটা সাবেক আবাহনী তারকার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও স্বস্তির। এই ফোরাম নির্বাচনে বেশ প্রভাব রাখতে সক্ষম। মোট ১৩৪টির মধ্যে ফোরামের হাতে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট।

অবশ্য, তারপরও কথা থেকে যায়। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি মেয়র কী সালাউদ্দিনকে সমর্থন দিয়ে যাবেন বা দিয়ে যেতে পরবেন? নির্বাচন এমন বিষয়, যেখানে যেকোনও সময় যেকোনও দৃশ্যপটেরই আর্বিভাব হতে পারে। পোটন, নজিব, মঞ্জুর কাদেররা যে উঠে পড়ে লেগেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন পেতে তারা চেষ্টার কোনও ক্রুটি করছেন না।

ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রীর আনুকূল্য না পাওয়া গেলে সালাউদ্দিনকে সরানোর দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টার মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনাই বেশি। ‘ফুটবল বাঁচাও’ জোটের সামনে দুটো পথ। এক. প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন আদায়। দুই. টাকা ছড়িয়ে ভোটের হাওয়া নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসা। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা গেছে, দুটো পথেই খুব সিরিয়াসভাবে এগুচ্ছে পোটন-কাদেরের ‘ফুটবল বাঁচাও’ জোট। প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনের জন্য কাজে লাগানো হয়েছে নজিব আহমেদকে। বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপনের দ্বারস্থও হয়েছে তারা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাফুফে নির্বাচন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীকে পুরোপুরি নিশ্চুপ এবং নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে।

জানা গেছে, ফুটবল প্রশ্নে আওয়ামী পন্থী দুই গ্রুপের এই দ্বন্দ্বে বেশ বিরক্ত শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী নাকি বলেছেন, ‘আবাহনীও আমার, শেখ জামাল-শেখ রাসেলও আমার। আমাদের মধ্যে এত বিবাদ থাকবে কেন?’

প্রধানমন্ত্রী অবস্থান নিরপক্ষে মনে হলেও দুই জোটের দাবি আবার ভিন্ন। দিন ক’য়েক আগে সালাউদ্দিন প্যানেলের এক নীতি নির্ধারক এ প্রতিবেদককে জানান, প্রধানমন্ত্রী নাকি এক বাক্যে তাদেরকে সমর্থন দিয়ে দিয়েছেন।

একই দাবি ‘ফুটবল বাঁচও’ জোটেরও। তারা বলছেন, সালাউদ্দিনের ব্যর্থতায় বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী। তাই আমাদেরই সমর্থন দিয়েছেন তিনি।

ফুটবল উন্নয়নে সালাউদ্দিন তেমন কিছু করতে পারেননি, সত্যি কথা। প্রধানমন্ত্রী ব্যাপারটা জানেনও। তারপরও এই সালাউদ্দিনকে রেখে অন্য কাউকে তিনি সমর্থন দিবেন, এটা আশা করাও কঠিন। শেখ কামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং কিংবদন্তি ফুটবলার হিসেবে সালাউদ্দিনের প্রতি যথেষ্টই দুর্বলতা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

শেখ জামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন মঞ্জুর কাদেরও। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে কাদেরের অতটা গ্রহণযোগ্যতা নেই।

ফুটবল সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ‘‍ফুটবল বাঁচাও’ জোট যতই চেষ্টা করুক, প্রধানমন্ত্রী হয়তো সালাউদ্দিন বিরোধী হবেন না। বাফুফে নির্বাচনে তিনি শেষ পর্যন্ত হয়তো নিরপেক্ষই থাকবেন। এবং সেটা হলে পরাজয় বোধ হয় ‘ফুটবল বাঁচাও’ জোটেরই হবে। – See more at: http://www.dhakatimes24.com/2016/04/22/110295#sthash.koUcW1IS.dpuf

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031