অভ্যন্তরীন নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরসহ সারাদেশে অভ্যন্তরীন রুটে নৌপথে সব ধরনের পরিবহন দ্বিতীয় দিনের মত বন্ধ রয়েছে। যার ফলে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামের বহি:নোঙ্গরে ৫১টি জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় অলস আছে।
টানা দ্বিতীয় দিনের মত ধর্মঘটে সারা দেশের অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন সেক্টর এক প্রকার অচল হয়ে পড়লেও সমস্যা নিরসনে দৃশ্যত কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছেনা।
ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ, নৌ পথে চাঁদাবাজি বন্ধসহ ১৫ দফা দাবিতে সারাদেশে নৌ-যান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। বুধবার দিনগত মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশ নৌ-যান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের এ কর্মবিরতি শুরু হয়েছে।
নৌয়ান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, আমাদের দাবি মানার বিষয়ে কোন পক্ষই সন্তোষজনক কোন উদ্যোগ নেয়নি, দাবি মানার আশ্বাস পেলে যে কোন মূহুর্তে নৌ শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে।”
ধর্মঘটের কারণে অভ্যন্তরীন রুটে প্রায় ১৫’শ জাহাজ ধর্মঘট পালন করছে, এরমধ্যে ৩’শ জাহাজ তেল পরিবহন ও ৩’শ জাহাজ সমুদ্রে মৎস্য আহোরন করে থাকে।
“ গত ২৬ জানুয়ারী সরকার ও মালিক পক্ষের সাথে সম্পাদিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তি কার্যকর না হওয়ায় এই ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছে নৌ যান শ্রমিকরা, মালিকরা কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেনা, তারা এই নিয়ে আলোচনায়ও আসছেনা, উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে, কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট খোরশেদ আলম বলেছেন, শ্রমিকদের ১৫ দাবি মানা সম্ভব নয়, এসব দাবি মেনে নেওয়া হলেও জাহাজ মালিকরা অার এই সেক্টরে থাকতে পারবেনা, জ্বালানী তেল ও অনান্য ব্যয় কাংক্ষিত মাত্রার চেয়েও অনেক বেশি।”
“এই অবস্থায় শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি ও অনান্য দাবি একে বারেই অযৌক্তিক, তাছাড়া ১৫ দফার অনেকগুলো জাহাজ মালিকদের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়, উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে, নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহি: নোঙ্গরের মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাসও বন্ধ আছে টানা দুই দিন।
চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন পরিদর্শক মাহবুবুল আলম জানিয়েছেন, বুধবার রাত থেকে বহি:নোঙ্গরে কোন পণ্য খালাস হচ্ছেনা, লাইটারেজ জাহাজে অভ্যন্তরীন রুটে পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় বন্দরের জেটিতে অবস্থান রত: জাহাজগুলো থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে ধীর গতিতে।
তিনি আরো জানান, বন্দরে বহি; নোঙ্গরে বর্তমানে ৫১টি জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় ঠায় দাড়িয়ে আছে, এরমধ্যে ছয়টি হচ্ছে তেল বহনকারী জাহাজ।
নৌযান শ্রমিকরা ধর্মঘটে থাকায় দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর ও এর আশপাশে অভ্যন্তরীন নৌবন্দর সদরঘাট ও মাঝির ঘাটে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
গত বুধবার জাহাজ মালিকদের সাথে সরকার ও শ্রমিকদের আলোচনা ভেঙ্গে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার এই নিয়ে আর দৃশ্যত কোন অালোচনা হয়নি বলে দাবি করেছে শ্রমিকরা।