বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারপারসন তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী, কন্যারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াই দুই বছর আগে সপরিবারে সৌদি আরব সফর করেছেন। কোন দেশের পাসপোর্ট নিয়ে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন, সেই জবাব মিলছে না।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানের বাংলাদেশি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে। এরপর তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা মেয়াদ বৃদ্ধি বা হাতে লেখা পাসপোর্টের বদলে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেননি।
আর ২০১৪ সালের ২ জুন তারেক রহমান, স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানের পাসপোর্ট যুক্তরাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জমা দেন। তার সেই পাসপোর্ট লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনে পাঠিয়ে দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।
অর্থাৎ প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী-কন্যার।
এই অবস্থাতেও ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে সপরিবারে সৌদি আরব যান তারেক রহমান। তখন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ওমরাহ করতে সৌদি রাজ পরিবারের আমন্ত্রণে সেখানে ছিলেন।
ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটায় এমিরাত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে জেদ্দা কিং আব্দুল আজিজ বিমান বন্দরে অবতরণ করেন তারেক রহমান, তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান ও খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও সন্তানেরা।
তখন ২১ দিন সৌদি আরব অবস্থান করেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। ২৯ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া বাংলাদেশ এবং তারেক রহমানের যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে সৌদি আরব ছাড়েন।
তখনও বিষয়টি নিয়ে মৃদু আলোচনা হয়েছিল যে তারেক রহমান কোন দেশের পাসপোর্টে সৌদি আরব গেছেন। তবে তিনি যে ওই সফরের দুই বছরেরও বেশি সময় আগে তার পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন, সেটি তখন নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক নজরুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কোনো দেশের পাসপোর্ট ছাড়া কোনো মানুষের পক্ষে বৈধভাবে বিদেশে যাওয়া সম্ভব না। বিদেশি হিসেবে বৈধভাবে কোনো দেশে যেতে হলে সে দেশের ভিসা লাগবেই, আর সে ভিসা দেয়া হয় পাসপোর্টেই।’
বিদেশে থাকা অবস্থায় পাসপোর্ট জমা দিলে অন্য দেশে যাওয়া সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘কেউ যদি যেতে চায়, তাহলে তাকে অবৈধভাবে লুকিয়ে যেতে হবে। বৈধভাবে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
অর্থাৎ তারেক রহমান তখন কোনো না কোনো দেশের পাসপোর্টে সৌদি আরব গিয়েছিল। তবে সেটি বাংলাদেশের ছিল না এটা নিশ্চিত।
বিএনপিও স্বীকার করেছে, তারেক রহমান তার পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, এখন পাসপোর্টের দরকার নেই বলে তারেক রহমান তা জমা দিয়েছেন।
তাহলে তারেক রহমান কীভাবে যুক্তরাজ্য থেকে অন্য দেশে গেলেন?-জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টা সম্পর্কে আমি জানি না, কারণ বিএনপির পক্ষ থেকে এক ধরনের কথা বলা হচ্ছে, আবার শাহরিয়ার আলমরা (পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী) বলছেন অন্য রকম।’